দুমকী: পটুয়াখালীর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা
দুমকী উপজেলা বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা। ৯২.৪৬ বর্গ কিমি আয়তনের এই উপজেলাটি ২২°২৩´ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২২°৩০´ উত্তর অক্ষাংশের এবং ৯০°১৭´ পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে ৯০°২৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। উত্তরে বাকেরগঞ্জ, দক্ষিণে পটুয়াখালী সদর, পূর্বে বাউফল এবং পশ্চিমে মির্জাগঞ্জ উপজেলা অবস্থিত।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
দুমকীর ইতিহাস রয়েছে বহুদূর অতীতে। একসময় এ অঞ্চল ছিল নদীনালা, খাল ও বনজঙ্গলবেষ্টিত। পটুয়াখালী শহরের উত্তর পাশে পায়রা নদীর উত্তর পারে বিক্ষিপ্তভাবে মানুষ বসবাস করত। সপ্তদশ শতাব্দীতে মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের উপদ্রব ছিল প্রবল। এলাকাটি তখন চন্দ্রদ্বীপ রাজ্য নামে পরিচিত ছিল। লোহালিয়া নদীর পশ্চিম পাড়ের মুরাদিয়া, শ্রীরামপুর, জামুরা এলাকা চিত্রকর, সুতা বিক্রেতা ও হাড়িপাতিল তৈরির জন্যে পরিচিত ছিল। আজকের দুমকী থানার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতো মুরাদিয়া, শ্রীরামপুর নদী, ডাকাতিয়া খাল, কোকারজোড় খাল ইত্যাদি। পলিমাটি পড়ে চর জেগে উঠলে আস্তে আস্তে জনবসতি গড়ে ওঠে।
দুমকী উপজেলার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০০০ সালের ৮ জুলাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুমকী সফরে এসে এর উদ্বোধন করেন। ১৯৮৩ সালের ২৮ জুলাই দুমকী পুলিশ থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৪ সালের ২২ অক্টোবর হারুন-অর-রশীদ হাওলাদারের নেতৃত্বে দুমকীকে উপজেলায় উন্নীতকরণের দাবী জানানো হয়। ২০০০ সালের ২ ফেব্রুয়ারী প্রথম উপজেলা নির্বাহী অফিসার যোগদানের মাধ্যমে দুমকী উপজেলার কার্যক্রম অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা:
দুমকীতে অবস্থিত পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, শেখ হাসিনা সেনানিবাস দুমকীকে করে তুলেছে গুরুত্বপূর্ণ। লেবুখালী, পাঙ্গাসিয়া, মুরাদিয়া, আঙ্গারিয়া ও শ্রীরামপুর নামে পাঁচটি ইউনিয়ন রয়েছে এ উপজেলায়।
জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক অবস্থান:
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দুমকী উপজেলার জনসংখ্যা ৭০,৬৫৫। এটি একটি উপকূলীয় ও নদীবহুল অঞ্চল। নৌপথ এখানকার সবচেয়ে সুবিধাজনক পরিবহন ব্যবস্থা।
অর্থনীতি:
দুমকীর অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। বালাম চাউলের জন্য এ অঞ্চল একসময় বিখ্যাত ছিল।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ:
মরহুম এম. কেরামত আলী (সাবেক মন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব), হারুন-অর-রশীদ হাওলাদার (প্রথম নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান)।