দাগনভূঞা উপজেলা: ফেনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ
দাগনভূঞা উপজেলা চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলার অন্তর্গত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি ফেনী জেলার সর্ব-পশ্চিমে অবস্থিত এবং কুমিল্লা, নোয়াখালী জেলার সাথেও সীমান্ত ভাগ করে নেয়। ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের (এন ১০৪) উপর অবস্থিত হওয়ায় এটি চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং বরিশাল বিভাগে যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু। ফেনী জেলা সদর থেকে দাগনভূঞার দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার।
ঐতিহাসিক তথ্য:
দাগনভূঞার পূর্ব নাম ছিল গোপীগঞ্জ। জমিদার শ্রী অরুণ সিং বাহাদুরের স্ত্রী গোপীদেবীর নামানুসারে এ নামকরণ করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। মুঘল আমলে বার ভূঁইয়াদের একজন 'দাগন ভূঁইয়া' এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন বলে ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে। তার নামানুসারেই এ এলাকার নাম দাগনভূঞা হিসেবে প্রচলিত হয়। ১৯৭৯ সালে দাগনভূঞা থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর এটি উপজেলায় উন্নীত হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:
দাগনভূঞা উপজেলার আয়তন ১৬৫.৮৪ বর্গ কিলোমিটার। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ২,২৫,৪৬৪ জন ছিল। জনসংখ্যার বেশিরভাগ মুসলমান। এখানে ফেনী নদী প্রবাহিত এবং ছোট ফেনী নদী এবং দাদনা খালও রয়েছে।
অর্থনৈতিক কার্যক্রম:
দাগনভূঞার অর্থনীতি মূলত কৃষিভিত্তিক। ধান, গম, আলু, ডাল, শাকসবজি এখানকার মূল ফসল। ছোট ছোট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং হাট-বাজারগুলোও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চিংড়ি চাষ এবং অন্যান্য মৎস্য উৎপাদন এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:
দাগনভূঞা উপজেলায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক, এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। একটি ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা:
ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়কের উপর অবস্থানের কারণে দাগনভূঞায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত ভাল। যানবাহনের মাধ্যমে এখানে সহজেই যাতায়াত করা যায়।
উপসংহার:
দাগনভূঞা উপজেলা ফেনী জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ঐতিহ্য, কৃষি, ব্যবসা, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সেবা এখানে উন্নততর হওয়ার জন্য কাজ চলছে।