জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল: বিএনপির একটি অঙ্গসংগঠন
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বিএনপির অন্যতম অঙ্গসংগঠন হল জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি মূলত তাঁতশিল্পের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব করার লক্ষ্য নিয়ে গঠিত হলেও, বর্তমানে এর কার্যক্রম ও প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সংগঠনের গঠন ও কার্যক্রম:
তাঁতী দলের একটি সুসংগঠিত কাঠামো নেই। এর কোনো নির্দিষ্ট গঠনতন্ত্র, দপ্তর বা কার্যালয় নেই। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠার পর ৩৯ বছর ধরেও সংগঠনের গঠনতন্ত্র তৈরি হয়নি। এমনকি সংগঠনের কার্যালয় ও নেই। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। ২০১৬ সালে একটি খসড়া গঠনতন্ত্র তৈরি করা হলেও তা চূড়ান্ত হয়নি। এই সংগঠনটি বর্তমানে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আবুল কালাম আজাদ বর্তমান আহ্বায়ক। দীর্ঘদিন সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন হুমায়ুন ইসলাম খান। এখন তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির তাঁতীবিষয়ক সম্পাদক।
সংগঠনের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া এবং সদস্য নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ আছে যারা বিএনপিতে জায়গা পান না, তাদের পদ-পদবি দেওয়ার কৌশল থেকেই তাঁতী দলের কমিটি গঠন করা হয়। অনেক জেলায় তাঁতশিল্প নেই, এমন জেলায়ও তাঁতী দলের কমিটি রয়েছে। আবুল কালাম আজাদ এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, তাঁত নেই এমন জেলায় ছাত্রদল, যুবদল, বা স্বেচ্ছাসেবক দলে যাঁদের জায়গা হয়নি, তাঁদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।
কার্যকলাপ ও প্রভাব:
তাঁতী দলের দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। তাঁতশিল্পের উন্নয়নের জন্য তাদের ১১ দফা দাবি রয়েছে, যার মধ্যে তাঁত ব্যাংক প্রতিষ্ঠার দাবি অন্যতম। তবে তাদের কার্যক্রম কতটা কার্যকর, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও তেমন আগ্রহ নেই। বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও তাঁতী দলের তেমন কোনো অংশগ্রহণ ছিল না।
অভিযোগ:
তাঁতী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দলীয় পদ-পদবি ও কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। শীর্ষ নেতারা সংগঠনটিকে আর্থিক স্বার্থ হাসিলের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ। উৎকোচের বিনিময়ে জেলা কমিটি অনুমোদন, অর্থ আত্মসাত এবং পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ রয়েছে।
উপসংহার:
জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল বিএনপির একটি অঙ্গসংগঠন হলেও, এর কার্যক্রম ও প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গঠনতন্ত্রের অভাব, কার্যকর কার্যক্রমের অভাব এবং দুর্নীতির অভিযোগ এর প্রভাব কমিয়েছে। ভবিষ্যতে এর কার্যক্রম ও প্রভাব কতটা বৃদ্ধি পায়, তা সময়ই বলে দেবে।