ডিজিটাল মুদ্রা (ইলেক্ট্রনিক মুদ্রা বা ইলেক্ট্রনিক টাকা) হল একধরনের মুদ্রা যা শুধুমাত্র ডিজিটাল আকারে বিদ্যমান, ভৌত নয়। এটি ব্যাংক নোট বা কয়েনের মতোই কাজ করে, তবে তাৎক্ষণিক লেনদেন এবং সীমান্তহীন মালিকানা হস্তান্তরের সুযোগ করে দেয়। ভার্চুয়াল মুদ্রা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি এর উদাহরণ। এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকও "ডিজিটাল ভিত্তিক মুদ্রা" জারি করে। প্রথাগত মুদ্রার মতো এটিও পণ্য বা সেবা ক্রয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়, তবে কিছু সম্প্রদায়ে এর ব্যবহার সীমিত। বাংলাদেশে কোনো ডিজিটাল মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক স্বীকৃত নয়।
ডিজিটাল মুদ্রা ইলেক্ট্রনিক্যালি সঞ্চিত-ভ্যালু কার্ড বা অন্যান্য যন্ত্রে সংরক্ষিত থাকে। নেটওয়ার্ক অর্থ এর অন্য একটি রূপ যা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়। এটি বেসরকারি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত হিসাবে রাখা যায়।
ডিজিটাল অর্থ কেন্দ্রীভূত (কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ) বা বিকেন্দ্রীভূত (বিভিন্ন উৎস থেকে নিয়ন্ত্রণ) হতে পারে।
১৯৮৩ সালে ডেভিড চৌম ডিজিটাল মুদ্রার ধারণা প্রদান করেন। ১৯৯০ সালে তিনি আমস্টারডামে DigiCash নামে একটি ইলেক্ট্রনিক নগদ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৭ সালে কোকা-কোলা মোবাইল পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করে। ১৯৯৮ সালে পেপ্যালের উদ্ভব হয়। ২০০৮ সালে বিটকয়েনের আবির্ভাব ডিজিটাল মুদ্রার নতুন যুগের সূচনা করে।
ডিজিটাল মুদ্রার উৎপত্তি ১৯৯০-এর দশকে ডট-কম বুমের সময়। স্বর্ণ সমর্থিত e-gold (১৯৯৬) এবং Liberty Reserve (২০০৬) এর উদাহরণ। ২০০৫ সালের প্রথম দিকে, Tencent QQ প্ল্যাটফর্মে Q coins ব্যবহৃত হত। ২০০৮ সালের পর ক্রিপ্টোকারেন্সির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (২০১২, ২০১৫) এবং আন্তর্জাতিক সেটেলমেন্ট ব্যাংক (২০১৫) ডিজিটাল মুদ্রার বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছে। বিটকয়েন একটি ডিজিটাল মুদ্রা, যা ভার্চুয়াল মুদ্রার একটি রূপ। ক্রিপ্টোগ্রাফিক অ্যালগরিদম ভিত্তিক ভার্চুয়াল মুদ্রাকে ক্রিপ্টোকারেন্সি বলা হয়।
ব্যাংকের অধিকাংশ লেনদেন ডিজিটালি পরিচালিত হয়। ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং এনএফটির মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল এনএফটির অ-প্রতিস্থাপনযোগ্যতা। বিভিন্ন পদ্ধতি যেমন PayPal, ইক্যাশ, ওয়েবমানি ইত্যাদি ডিজিটাল মুদ্রার লেনদেনের সুযোগ করে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ডিজিটাল স্বাক্ষর, পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্কিং এবং বিকেন্দ্রীকরণের উপর নির্ভর করে। প্রুফ-অব-ওয়ার্ক বা প্রুফ-অফ-স্টেক ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়। বিটকয়েন এর প্রথম এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় উদাহরণ।
ভার্চুয়াল মুদ্রার আইনি দিক নিয়ে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আর্থিক নিয়ন্ত্রক, এবং সরকারি সংস্থা বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। বিভিন্ন দেশে ডিজিটাল মুদ্রার ব্যাপক ব্যবহার এবং গ্রহণযোগ্যতা বিভিন্ন। বাংলাদেশে বর্তমানে ক্রিপ্টোকারেন্সি বৈধ নয়।