ডঃ মোহাম্মদ সাদিক: একজন কবি, রাজনীতিবিদ ও প্রশাসক
ডঃ মোহাম্মদ সাদিক একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী ব্যক্তিত্ব, যিনি কবি, রাজনীতিবিদ এবং প্রশাসক হিসেবে সুপরিচিত। ১৯শে সেপ্টেম্বর, ১৯৫৫ সালে সুনামগঞ্জ জেলার ধাড়ারগাঁও গ্রামে তাঁর জন্ম। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বি.এ.(সম্মান) এবং এম.এ. ডিগ্রি অর্জনের পর, তিনি যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পারসোনাল ম্যানেজমেন্ট এবং ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিলেটি নাগরী লিপির উপর গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগদানের পর ডঃ সাদিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষা সচিব, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব এ্যাডমিনিস্ট্রেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট (বিয়াম) ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমীর পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নজরুল ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা সচিব-সহ শিল্প, অর্থ, তথ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। সুইডেনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রথম সচিব ও কাউন্সেলর হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবে যোগদানের পর, ২০১৬ সালের ২ মে তিনি পিএসসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। রাজনীতিতেও তিনি সক্রিয় ছিলেন এবং ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার ফলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।
সাহিত্যেও ডঃ সাদিকের অবদান উল্লেখযোগ্য। তাঁর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ‘আগুনে রেখেছি হাত’, ‘ত্রিকালের স্বরলিপি’, ‘বিনিদ্র বল্লম হাতে সমুদ্রের শব্দ শুনি’, ‘কে লইব খবর’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘শফাত শাহের লাঠি’ উল্লেখযোগ্য। তিনি চিনুয়া এচিবি-র বিখ্যাত উপন্যাস ‘No Longer at Ease’ এর বাংলা অনুবাদ ‘নেই আর নীলাকাশ’ করেছেন। কবিতায় অবদানের জন্য তিনি ২০১৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরষ্কার লাভ করেন। তিনি বাংলা একাডেমি ও এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশের জীবন সদস্য এবং জাতীয় কবিতা পরিষদ ও বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ডঃ সাদিকের সহধর্মিণী জেসমিন আরা বেগম বিসিএস (বিচার) ক্যাডারের একজন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অবৈতনিক সদস্য ছিলেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। ডঃ সাদিকের পুত্র মোহাম্মদ কাজিম ইবনে সাদিক এবং কন্যা মাসতুরা তাসনিম সুরমা।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করে এবং সাহিত্যে অবদান রেখে ডঃ মোহাম্মদ সাদিক বাংলাদেশের জনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।