ড. মোবারক আহমেদ খান: পাট গবেষণার অগ্রদূত
ড. মোবারক আহমেদ খান একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী বিজ্ঞানী, যিনি পাটের বাণিজ্যিক ব্যবহার ও সম্ভাবনা উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ১৯৯০-এর দশক থেকে তিনি পাটের উপর গবেষণা করে আসছেন এবং বৈশ্বিকভাবে পাট বিষয়ক গবেষণায় তাঁকে একজন অগ্রণী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি বিভিন্ন উদ্ভাবনের জন্য স্বীকৃতি লাভ করেছেন, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো পরিবেশবান্ধব ‘সোনালী ব্যাগ’। এছাড়াও তিনি পাটের তৈরি জুটিন (ঢেউটিন), হেলমেট এবং টাইলস উদ্ভাবন করেছেন। ২০২৪ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।
ড. মোবারক আহমেদ খান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি পলিমার এবং তেজষ্ক্রিয় রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক মহাপরিচালক ছিলেন এবং বর্তমানে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর গবেষণার ফলাফল বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকাশনায় প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি ২০০৯ সালে পাট ও পলিমার মিশ্রণে জুটিন নামক একটি ঢেউটিন উদ্ভাবন করেন। ২০১৬ সালে ফরমালিনের বিকল্প হিসেবে অ-ক্ষতিকারক চিতোজান উদ্ভাবন করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য সাফল্যের জন্য তিনি বিভিন্ন পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন, যার মধ্যে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির স্বর্ণপদক (২০১৫), জাতীয় পাট পুরস্কার (২০১৬) এবং ফেডারেশন অফ এশিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটি পুরস্কার (২০১৭) অন্যতম। তার গবেষণা ও উদ্ভাবনের ফলে পাটের ব্যবহার বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হয়। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে তার গবেষণা নিয়ে কাজ করেছেন এবং তার কাজের উপর বিভিন্ন নথিপত্র প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৯৮ সালে ‘হুজ হু’ তথ্যসূত্রে তার নাম প্রকাশিত হয়।