জুলকারনাইন

আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৫ এএম
নামান্তরে:
জুলকারণাইন
Dhul-Qarnayn
জুলকারনাইন

জুলকারনাইন: ধর্মগ্রন্থ, ইতিহাস ও বিতর্কের মধ্যে এক রহস্যময় ব্যক্তিত্ব

জুলকারনাইন (বিকল্প উচ্চারণ: যালকারনাইন) একজন রহস্যময় ব্যক্তি, যার উল্লেখ পাওয়া যায় কুরআনের সূরা কাহাফে (১৮:৮৩-৯৮)। তিনি কে ছিলেন, কোন যুগে বসবাস করতেন এবং তাঁর পরিচয় নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। কুরআনে উল্লেখিত তাঁর কাজকর্মের বর্ণনা থেকে ধারণা করা হয়, তিনি ছিলেন একজন শক্তিশালী ও ন্যায়পরায়ণ শাসক, যিনি বিশাল অঞ্চল জয় করেছিলেন এবং বিভিন্ন জাতির মানুষের মধ্যে সুবিচার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

কুরআনে জুলকারনাইনের বর্ণনা:

কুরআন জুলকারনাইনকে একজন ধার্মিক ব্যক্তি হিসেবে চিত্রিত করেছে। তিনি বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চল ভ্রমণ করেছেন, সেখানকার মানুষের সাথে দেখা করেছেন, তাদের সমস্যা সমাধান করেছেন। সূরা কাহাফে তাঁর পশ্চিম ও পূর্ব দিকে ভ্রমণ, সেখানকার মানুষদের সাথে দেখা ও আলোচনার কথা বলা হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো তাঁর ইয়াজুজ-মাজুজের হাত থেকে এক সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য একটি প্রাচীর নির্মাণ করা। এই প্রাচীরটির অবস্থান নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, কিন্তু এটি দুটি পাহাড়ের মধ্যে তৈরি ছিল বলে কুরআনে উল্লেখ আছে।

জুলকারনাইনের পরিচয় নিয়ে তত্ত্ব:

জুলকারনাইন কে ছিলেন তা নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব রয়েছে। সবচেয়ে প্রচলিত তত্ত্ব হলো তিনি মেসেডোনিয়ার সম্রাট আলেকজান্ডার (৩য়)। কারণ আলেকজান্ডারের বিশ্বজয়ী অভিযান এবং ককেশাস পর্বতমালায় ইয়াজুজ-মাজুজের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক প্রাচীর নির্মাণের ঘটনা কুরআনে বর্ণিত জুলকারনাইনের কাজের সাথে মিলে যায়। তবে অনেক পণ্ডিত আলেকজান্ডারের সাথে জুলকারনাইনের মিল খুঁজে পান না। অন্যান্য তত্ত্ব অনুসারে, জুলকারনাইন হতে পারেন সাইরাস দ্য গ্রেট অথবা হিমায়ার সাম্রাজ্যের একজন শাসক।

স্থান:

কুরআনে উল্লেখিত জুলকারনাইনের ভ্রমণের স্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের স্থান এবং দুটি পর্বতের মধ্যবর্তী স্থান উল্লেখ করা হয়েছে। আলেকজান্ডার তত্ত্বের সমর্থনে উল্লেখযোগ্য হলো কাস্পিয়ান সাগরের উপকূল, দারিয়াল ও দারবেন্ত শহর।

বিতর্ক:

জুলকারনাইন কে ছিলেন সে সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক তথ্য নেই। কুরআন ছাড়া অন্য কোন সূত্রে তাঁর সুনির্দিষ্ট পরিচয়ের প্রমাণ পাওয়া যায় না। কিছু পন্ডিত মনে করেন তিনি একজন নবী ছিলেন, আবার অন্যরা মনে করেন তিনি শুধুমাত্র একজন ন্যায়পরায়ণ ও শক্তিশালী শাসক ছিলেন। তাঁর নামের অর্থ নিয়েও মতভেদ রয়েছে।

উপসংহার:

জুলকারনাইন কুরআনে উল্লেখিত একজন রহস্যময় ব্যক্তিত্ব, যাঁর পরিচয় নিয়ে বিতর্ক চলে আসছে। তাঁর কাজকর্ম ইতিহাস ও ধর্মগ্রন্থের গবেষণার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়ে আরও গবেষণা ও তথ্যের প্রয়োজন।

মূল তথ্যাবলী:

  • কুরআনের সূরা কাহাফে জুলকারনাইনের উল্লেখ আছে।
  • তিনি একজন শক্তিশালী ও ন্যায়পরায়ণ শাসক ছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
  • তিনি ইয়াজুজ-মাজুজের হাত থেকে এক সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য প্রাচীর নির্মাণ করেছিলেন।
  • জুলকারনাইনের পরিচয় নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব রয়েছে, যার মধ্যে আলেকজান্ডার সবচেয়ে প্রচলিত।
  • তাঁর প্রকৃত পরিচয় নিয়ে ঐতিহাসিক তথ্যের অভাব রয়েছে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - জুলকারনাইন

৫ আগস্ট ২০২৪

শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার খবরে আনন্দ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।

৫ আগস্ট ২০২৪

জুলকারনাইন সাভারে পুলিশের গুলিতে নিহত হন।