জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, যা দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য শিক্ষাক্রম উন্নয়ন, পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও বিতরণের দায়িত্ব পালন করে। এনসিটিবি দেশের সকল সরকারি এবং অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাক্রম নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর 'পূর্ববঙ্গ স্কুল টেক্সটবুক কমিটি' গঠিত হয়। ১৯৫৪ সালে 'টেক্সটবুক আইন' পাশের মাধ্যমে 'স্কুল টেক্সটবুক বোর্ড' নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত বোর্ড গঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৬, ১৯৬১ এবং ১৯৬৩ সালে বোর্ডটি পুনর্গঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত “বাংলাদেশ স্কুল টেক্সটবুক বোর্ড” ১ম থেকে ১০ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের সংশোধন, পরিমার্জন ও পুনর্লিখন করে। ১৯৭৮-৭৯ সালে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড অধ্যাদেশ, ১৯৮৩-এর মাধ্যমে 'স্কুল টেক্সটবুক বোর্ড' ও 'জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন কেন্দ্র' একীভূত হয়ে বর্তমান এনসিটিবি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে “জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড অধ্যাদেশ, ১৯৮৩” রহিত করে “জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইন ২০১৮” পাশ হয়।
প্রধান কার্যাবলি:
- শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, উন্নয়ন, নবায়ন, নিরীক্ষণ এবং সংস্কার।
- পাঠ্যপুস্তকের পান্ডুলিপি প্রণয়ন।
- প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা উপকরণ প্রস্তুত ও প্রকাশ।
- ডিজিটাল ও মিথস্ক্রিয়া পুস্তক প্রণয়ন ও অনুমোদন।
- পাঠ্যপুস্তকের মুদ্রণ, প্রকাশনা, বিতরণ এবং বিপণন।
- বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ:
এনসিটিবির বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। বর্তমানে চেয়ারম্যান, সদস্য ও সচিবদের নাম ও পদবী সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে সংগ্রহ করা যাবে।
সংক্ষিপ্তকরণ:
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শিক্ষাক্রম উন্নয়ন, পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন এবং বিতরণের মাধ্যমে দেশের শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।