বাংলাদেশের ইসলামের প্রতীক, ঐতিহ্য ও স্থাপত্যের এক অপূর্ব সমন্বয়, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররম। ঢাকার পল্টনে অবস্থিত এই মসজিদটি দেশের মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থনাস্থল এবং দর্শনীয় স্থান।
- *ইতিহাস:** ১৯৫৯ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে, বাওয়ানী জুট মিলসের মালিক আব্দুল লতিফ ইব্রাহিম বাওয়ানী এবং তার ভাতিজা ইয়াহিয়া বাওয়ানির উদ্যোগে ‘বায়তুল মুকাররম মসজিদ সোসাইটি’ গঠিত হয়। ১৯৬০ সালের ২৭ জানুয়ারী তৎকালীন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সিন্ধুর বিশিষ্ট স্থপতি আব্দুল হুসেন থারিয়ানির নকশায় নির্মিত এই মসজিদের নির্মাণ কাজ ১৯৬৮ সালে সম্পন্ন হয়। ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে আসছে।
- *স্থাপত্য:** বায়তুল মুকাররম মসজিদের স্থাপত্যশৈলী মুঘল ও আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর এক অনবদ্য সমন্বয়। পবিত্র কাবাঘরের আদলে তৈরি কাঠামো, এর বৃহৎ আকার, এবং আয়তাকার মিহরাব মসজিদটিকে অনন্য করে তুলেছে। মসজিদটি আটতলা এবং ৯৯ ফুট উঁচু। নিচতলায় বিপণিবিতান ও মার্কেট কমপ্লেক্স রয়েছে। দোতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত নামাজের ব্যবস্থা আছে।
- *ধারণক্ষমতা:** মূল মসজিদ ও সাহান মিলিয়ে মসজিদটির ধারণক্ষমতা প্রায় ৪০,০০০ মুসল্লি। জুম্মার নামাজ ও ঈদের নামাজের সময় মুসল্লিদের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। ২০০৮ সালে সৌদি সরকারের অর্থায়নে মসজিদের সম্প্রসারণ কাজ করা হয়।
- *গুরুত্ব:** বায়তুল মুকাররম বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ হিসেবে পরিচিত, যদিও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হয়নি। দেশের প্রধান মসজিদ হিসেবে এটি ধর্মীয়, সামাজিক, এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। প্রতিদিন হাজার হাজার মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করেন এবং অনেক দেশি-বিদেশি পর্যটক মসজিদটি দর্শন করতে আসেন। রমজান মাসে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের উদ্যোগে ইফতারের আয়োজন করা হয়।
- *অবস্থান:** ঢাকার পল্টন এলাকায় অবস্থিত।
- *সংক্ষেপে:** বায়তুল মুকাররম বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মসজিদ; এর স্থাপত্য অপরিসীম; ৪০,০০০ মুসল্লি ধারণক্ষমতা; পল্টনে অবস্থিত; ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ পরিচালনা করে।