আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ (International Majlis-e Tahaffuz-e-Khatm-e Nobuwat Bangladesh) বাংলাদেশের একটি ইসলামি সংগঠন যা দেশে আহমদীয়া সম্প্রদায়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবিতে কাজ করে। ১৯৯০ সালে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা উবায়দুল হক এবং মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা দিয়ে জাতীয় সংসদে খতমে নবুয়ত আইন পাস করার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সংগঠনের বর্তমান সভাপতি মাওলানা ইয়াহইয়া আলমপুরী এবং মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী।

এই সংগঠনটির উৎপত্তি ১৮৬০-এর দশকে ভারতে প্রতিষ্ঠিত খতম-ই-নবুওয়াত আন্দোলনে পাওয়া যায়। আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যারা ব্রিটিশ ভারতে মির্জা গোলাম আহমদ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। খতমে নবুওয়াত মানে "নবুওয়াতের চূড়ান্ততা" এটি ইসলামিক বিশ্বাসকে বোঝায় যে মুহাম্মদ আল্লাহর শেষ দূত।

প্রাথমিকভাবে এটি খতমে নবুয়ত আন্দোলন নামে পরিচিত ছিল। ১৯৯৩ সালে এর নাম পরিবর্তন করে বর্তমান নামটি গ্রহণ করা হয় এবং প্রথম আমীর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মাওলানা উবায়দুল হক। ১৯৯৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর সংগঠনটির প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০০৪ সালের ৮ জানুয়ারি কাদিয়ানীদের সকল প্রকাশনা সরকারিভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০২১ সালের নভেম্বরে সংগঠনের আমীর মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী মৃত্যুবরণ করলে নতুন আমীর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মাওলানা ইয়াহইয়া আলমপুরী।

আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ খালেদা জিয়া সরকারের প্রথম মেয়াদে শুরু হয়ে শেখ হাসিনার মেয়াদেও চলতে থাকে এবং খালেদা জিয়া সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে তা আরও বৃদ্ধি পায়। ১৯৯২ সালে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয় এবং খুলনা ও রাজশাহীতে তাদের উপাসনালয়ে ভাংচুর করা হয়। ১৯৯৩ সালের ৩০ মার্চ, বাংলাদেশ খিলাফত আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে খতমে নবুয়ত আন্দোলনকে সমর্থন প্রদান করে।

এই সংগঠনটি ২০০৫ সালে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নিন্দা এবং ২০০৬ সালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারা প্রতিবাদে বাধা প্রদানের মধ্য দিয়ে বিতর্কের মুখোমুখি হয়। ২০০৫ সালে বগুড়ার আহমদীয়া মসজিদে 'অমুসলিম উপাসনাস্থল' লেখা সাইনবোর্ড লাগানো এবং সাতক্ষীরা জেলায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা সংগঠনের সাথে যুক্ত বলে অভিযোগ করা হয়। ২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়াত আন্দোলন বাংলাদেশ সরকারকে আহমদিয়া সম্প্রদায়কে অমুসলিম সম্প্রদায় হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানায় এবং ২০১৩ সালে আহমদিয়া সম্মেলনের স্থান ধ্বংস করে। এই সংগঠনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি ইসলামি সংগঠন।
  • এটি আহমদীয়া সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা এবং খতমে নবুয়ত আইন পাসের জন্য আন্দোলন করে।
  • সংগঠনটির বিরুদ্ধে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
  • সংগঠনটির উৎপত্তি ভারতের খতম-ই-নবুওয়াত আন্দোলনে।

গণমাধ্যমে - আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ

24/12/2024

আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের নতুন নেতৃত্ব নিয়োগ করা হয়েছে।