২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পর থেকে ‘জজ মিয়া’ নামটি বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি বিতর্কিত ও রহস্যময় নাম হিসেবে পরিচিত। একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান মো. জালাল আহমেদ, যিনি ‘জজ মিয়া’ নামে পরিচিত, গ্রেনেড হামলার মামলায় জড়িত হওয়ার দাবি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তদন্তে প্রমাণিত হয় যে, তৎকালীন সরকারের কিছু কর্মকর্তা তাকে এই মামলায় জড়িয়ে একটি ‘নাটক’ সাজিয়েছিলেন।
জালালের নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বীরকোট গ্রামের বাড়ি। তিনি ঢাকার মতিঝিল ও স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় হকারি করে ফল বিক্রি এবং মাঝে মাঝে পোস্টার বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ২০০৫ সালের ৯ জুন তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিআইডির তৎকালীন তিন কর্মকর্তা - বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, এএসপি আবদুর রশীদ ও মুন্সি আতিকুর রহমান- ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে এবং প্রলোভন দিয়ে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করেন। জালালের বক্তব্য অনুযায়ী, তাকে থানার মধ্যে মারধর করা হয় এবং তার হাতের হাড় ভেঙে যায়।
আদালতে তিনি সিআইডির দেয়া তথ্য অনুযায়ী জবানবন্দি দিলেও পরবর্তীতে মামলার তদন্ত পুনরায় শুরু হলে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন এবং ২০০৯ সালের ২৭ জুলাই মুক্তি পান। তারপর থেকে তিনি এই ঘটনার সাক্ষী হিসেবে কাজ করেছেন। তার জবানবন্দি এবং তদন্তে ‘জজ মিয়া নাটক’ সাজানোয় সিআইডির ওই তিন কর্মকর্তার ভূমিকার কথা উঠে আসে। ২০০৯ সালে ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে জালাল ঢাকার কদমতলী থানা এলাকার রায়েরবাগে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।