চার্লস টমাস বায়াস টার্নার (১৬ নভেম্বর, ১৮৬২ - ১ জানুয়ারি, ১৯৪৪) অস্ট্রেলিয়ার একজন কিংবদন্তী ক্রিকেটার ছিলেন। নিউ সাউথ ওয়েলসের বাথার্স্টে জন্মগ্রহণকারী এই তারকা বোলার ১৮৮৭ থেকে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ‘চার্লি’ বা ‘টেরর’ ডাকনামে পরিচিত চার্লস টার্নার অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে বিবেচিত হন।
প্রথম দিকে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার তেমন উজ্জ্বল ছিল না। কিন্তু ১৮৮৬-৮৭ মৌসুমে বাথার্স্ট থেকে সিডনিতে ব্যাংকার হিসেবে স্থানান্তরের পর তার খেলার ধারণায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। মাত্র ৭ খেলায় ৭.৬৮ গড়ে ৭০টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট লাভ করেন। ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ১৮৪ রানে ৮ উইকেট নিয়ে তিনি নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেন। আলফ্রেড শয়ের নেতৃত্বাধীন দলের বিপক্ষেও তার অসাধারণ পারফরম্যান্স ইংলিশ ক্রিকেট সম্প্রদায়ে তার পরিচয় তৈরি করে।
অভিষেক টেস্টে ৬/১৫ ও ৯/৯৩ উইকেট নিয়ে তিনি সকলকে মুগ্ধ করেন। অনুপযোগী পিচে তার দক্ষতার কারণে তাকে ‘টেরর টার্নার’ বলা হতো। একমাত্র বোলার হিসেবে প্রথম ছয় টেস্টেই ৫০ উইকেট নিয়েছিলেন এবং প্রথম অস্ট্রেলীয় বোলার হিসেবে টেস্টে ১০০ উইকেটের মাইলফলক অর্জন করেন। ১৮৮৭-৮৮ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২/৮৭ উইকেটের অসাধারণ বোলিং পরিসংখ্যান এখনও সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের ইতিহাসে সেরা হিসেবে বিদ্যমান। ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৫ সালে সর্বশেষ টেস্ট খেলে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন।
অবসরের পর তিনি অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট প্রশাসনে যোগদান করেন। তার আমলে শুষ্ক মৌসুমে খেলার ব্যবস্থা করা হয় এবং পিচ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। টার্নার পরিবার ইংল্যান্ডের লিডস থেকে বাথার্স্টে চলে আসে এবং সেখানে বেশ কয়েকটি হোটেল পরিচালনা করে। তাদের রয়্যাল হোটেল এখনো টিকে আছে। ১৮৮৮ সালে ১১.২৭ গড়ে ২৮৩ উইকেট নিয়ে তিনি রেকর্ড গড়েন। ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ সালে এনএসডব্লিউ ক্রিকেট দলের শতবর্ষ উদযাপনে সর্বকালের সেরা দলের একজন হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ১৮৮৮ সালে হ্যাস্টিংসে ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে ৫০ রানে ১৭ উইকেট নেওয়ার ঘটনাও ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয়।