চন্দন

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম
নামান্তরে:
অনিন্দিতা
Santalum album
Indian Sandalwood
Santali Albi Lignum
শ্বেত চন্দন
চন্দন

চন্দন: গন্ধের রাজা

চন্দন (Santalum album), সান্টালাসি পরিবারের অন্তর্গত একটি গাছ, যার মূল্যবান কাঠ ও তেলের জন্য বিখ্যাত। ১৫ থেকে ১৮ মিটার উঁচু ও ২ থেকে ৪ মিটার প্রস্থের এই গাছ প্রায় ১০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এটির ব্যবহার প্রসাধনী, ঔষধ, এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

উৎপত্তি ও বিস্তার:

চন্দনের আদি নিবাস ইন্দোনেশিয়া (জাভা ও লেসার সুন্দা দ্বীপপুঞ্জ), ফিলিপাইন এবং পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া। প্রাচীন মশলা ব্যবসায় অস্ট্রোনেশীয় নাবিকদের মাধ্যমে এটি পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং কমপক্ষে খ্রিস্টপূর্ব ১৩০০ সাল থেকে দক্ষিণ ভারতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মাতে শুরু করে। বর্তমানে ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন এবং উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় চন্দন চাষ হয়।

উপকারিতা ও ব্যবহার:

চন্দনের কাঠ ও তেল উভয়ই অত্যন্ত মূল্যবান। কাঠ শক্ত, সুগন্ধী, এবং দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কারণে এটি শিল্পকর্ম, ধর্মীয় মূর্তি নির্মাণ, এবং সুগন্ধী দ্রব্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তেলের প্রধান উপাদান α-santalol এবং β-santalol, যা সুগন্ধি তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। চন্দন তেলের উৎপাদনে একসময় ভারত বিশ্বে অগ্রণী ছিল, তবে বর্তমানে উৎপাদন কমে গেছে।

সংরক্ষণ:

অত্যধিক কাটা এবং আবাসস্থলের ক্ষতির কারণে চন্দন বিলুপ্তির ঝুঁকিতে আছে। এই গাছটির সংরক্ষণ জন্য ভারত সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে, যেমন রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা, চাষাবাদের উন্নয়ন করা ইত্যাদি।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

চন্দনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। হিন্দু, বৌদ্ধ, ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মে এটি পবিত্র মনে করা হয় এবং বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়। প্রাচীন কাল থেকেই এর কাঠ ও তেল ঔষধ এবং প্রসাধনী তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

উল্লেখযোগ্য তথ্য:

  • ১৯১৭ সালে ভারতের মাইসোরে চন্দন তেলের প্রথম নিষ্কাশন হয়।
  • ISO 3518:2002 চন্দন তেলের মান নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ভারতের কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু রাষ্ট্রে চন্দনের চাষাবাদ এবং ব্যবস্থাপনা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
  • পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কুনুনুরা এলাকায় বৃহৎ চন্দন বাগান আছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • চন্দন (Santalum album) হলো একটি মূল্যবান গাছ
  • এটির কাঠ ও তেল প্রসাধনী, ঔষধ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়
  • এর আদি নিবাস ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া
  • অত্যধিক কাটা এবং আবাসস্থলের ক্ষতির কারণে চন্দন বিলুপ্তির ঝুঁকিতে আছে
  • ভারত সরকার চন্দনের সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।