চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তন (টিআইসি): চট্টগ্রাম শহরের নাট্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। কে.সি. দে সড়কে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। ১৯৬২ সাল থেকে প্রতি বছর ২৭শে মার্চ বিশ্ব থিয়েটার দিবস উদযাপন করা হয়।
১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি, চট্টগ্রাম ক্লাব মিলনায়তনে থিয়েটার-৭৩ নাট্যদলের দুটি নাটকের মঞ্চায়নের মাধ্যমে চট্টগ্রামে শহরকেন্দ্রিক গ্রুপ থিয়েটারের যাত্রা শুরু হয়। জহির রায়হানের ‘ম্যাসাকার’ এবং মমতাজউদ্দিন আহমদের ‘স্পার্টাকাস’ বিষয়ক জটিলতা ছিল সেই দুটি নাটক।
১৯৭৬ সালে, ‘গণায়ন নাট্য সম্প্রদায়’ ‘যায় দিন, ফাগুন দিন’ নামক বাংলাদেশের প্রথম পথনাটকের মঞ্চায়ন করে। এই পথনাটক চট্টগ্রামের থিয়েটারের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
চট্টগ্রামে ৭০-এর দশক থেকে বহু নাট্যদলের আবির্ভাব ঘটে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘তির্যক’, ‘অরিন্দম’, ‘নান্দীকার’, ‘গণায়ন’, ‘লোকালয়’ ইত্যাদি। মঞ্চ, সরঞ্জামের অভাব সত্ত্বেও তরুণদের উদ্যম ও সৃজনশীলতা চট্টগ্রামের থিয়েটারকে এগিয়ে নিয়েছে। আজ চট্টগ্রামে বহু নাট্যদল সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং শিল্পকলা একাডেমী, থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) প্রাঙ্গণে নিয়মিত নাটক মঞ্চায়িত হয়।
২০০৪ সালের ৭ই অক্টোবর আশা জাগানিয়া থিয়েটার কমপ্লেক্স, যা থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম নামে পরিচিত, উদ্বোধন করা হয়। এটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন একটা মিলনায়তন। এখানে একটি মূল মঞ্চ, আর্ট গ্যালারী, ল্যাবরেটরি থিয়েটার, ক্লাসরুম ইত্যাদি রয়েছে।
চট্টগ্রামের সংস্কৃতি ও থিয়েটারের ঐতিহ্য সমৃদ্ধ। বহু প্রতিভাবান নাট্যকর্মী, অভিনেতা, গায়ক এবং সংগীতশিল্পী এই শহর থেকে উঠে এসেছেন। তবে কিছু সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ এখনও রয়েছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় চট্টগ্রামে একটি পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ চলছে।