গ্রাফিতি

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

গ্রাফিতি: প্রতিবাদ, প্রকাশ, এবং বিতর্ক

গ্রাফিতি, দেয়ালে অঙ্কিত চিত্র ও লেখা, একই সাথে শিল্প ও বিতর্কের বিষয়। বিনা অনুমতিতে জনসমক্ষে দেয়ালে লেখন বা অঙ্কনের মাধ্যমে এ শিল্পের অভিব্যক্তি ঘটে। স্প্রে পেইন্ট, মার্কার পেন, কয়লা ইত্যাদি গ্রাফিতি তৈরির সাধারণ মাধ্যম। অনেক দেশে গ্রাফিতিকে বিকৃত ও ধ্বংসাত্মক শিল্প হিসাবে বিবেচনা করা হয় কারণ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এ মাধ্যমে তাদের কর্মকাণ্ড প্রচার করে।

গ্রাফিতির ইতিহাস:

প্রাচীন রোম ও পম্পেইয়ে সমাধিস্থলের দেয়ালে গ্রাফিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। দক্ষিণ সিরিয়া, পূর্ব জর্ডান, উত্তর সৌদি আরবে পাথরের উপর স্যাফাইটিক ভাষার লেখা গ্রাফিতি থেকে উদ্ভূত বলে মনে করা হয়। প্রাচীন গ্রীক নগরী এফেসাসে পতিতাবৃত্তির বিজ্ঞাপনে গ্রাফিতির ব্যবহার ছিল। প্রাচীন গ্রাফিতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ, সামাজিক ও রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার প্রতিফলন ঘটাতো।

আধুনিক গ্রাফিতি:

সমসাময়িক গ্রাফিতি হিপহপ সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত। ফিলাডেলফিয়া ও নিউ ইয়র্ক সিটির সুড়ঙ্গ থেকে এর উত্থান। শৌচাগার, সেতুতেও গ্রাফিতি দেখা যায়। 'মনিকাস' সবচেয়ে পুরাতন আধুনিক গ্রাফিতি বলে মনে করা হয় যা ভবঘুরে ও রেলশ্রমিকরা তৈরি করেছিল। বিল ড্যানিয়েল ২০০৫ সালে 'মনিকাস' -এর উপর 'হু ইজ বোজো টেক্সিনো' নামক একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণ করেন। 'ক্ল্যাপটন ইজ গড' ১৯৬৭ সালে তৈরি বিখ্যাত গ্রাফিতি। ১৯৮১ সালে ব্লেক লে রেট প্যারিসে স্টেনসিল গ্রাফিতির প্রচলন করেন। ১৯৮৫ সালে নিউ ইয়র্ক, মেলবোর্ন, সিডনিতে এর প্রসার ঘটে।

গ্রাফিতি ও প্রযুক্তি:

আধুনিক গ্রাফিতিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। ইয়ার্ণবোম্বিং গ্রাফিতির সাম্প্রতিক রূপ, যেখানে পূর্বের গ্রাফিতিতে পরিবর্তন আনা হয়।

খ্যাতনামা গ্রাফিতি শিল্পী:

বেশ কিছু গ্রাফিতি শিল্পী তাদের পরিচয় গোপন রাখেন। বাংসি, একজন বিখ্যাত রাজনৈতিক ও যুদ্ধবিরোধী গ্রাফিতি শিল্পী, যার কাজ বিশ্বব্যাপী দেখা যায়। ২০০০ সাল থেকে তার বেশ কিছু প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। পিক্সনিট আরেকজন গ্রাফিতি শিল্পী, যিনি সৌন্দর্য ও নকশা-কেন্দ্রিক কাজের জন্য পরিচিত।

গ্রাফিতির আন্তর্জাতিক প্রসার:

মধ্যপ্রাচ্যে গ্রাফিতির উত্থান ধীরগতিতে হলেও ইসরাইলি ওয়েস্ট ব্যাংক বেরিয়ার গ্রাফিতি শিল্পচর্চার স্থান হয়ে উঠেছে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব লক্ষণীয়। ২০১০ সাল থেকে মালয়েশিয়া 'স্ট্রিট ফেস্ট' এর আয়োজন করে গ্রাফিতি চর্চাকে উৎসাহ দিচ্ছে।

গ্রাফিতি: শিল্প নাকি ভাণ্ডাল্য?

গ্রাফিতি শিল্প হিসেবে মূল্যায়ন ও ভাণ্ডাল্য হিসেবে সমালোচিত হওয়ার দুটোই দিক রয়েছে। জনসম্মুখে শিল্প প্রদর্শনের একটি মাধ্যম হলেও অনুমতি ছাড়া সম্পত্তিতে চিহ্নিত করা ভাণ্ডাল্য হিসেবে গণ্য হয়। এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।

মূল তথ্যাবলী:

  • গ্রাফিতি হলো বিনা অনুমতিতে জনসমক্ষে দেয়ালে লেখা বা আঁকা
  • স্প্রে পেইন্ট, মার্কার পেন, কয়লা ইত্যাদি গ্রাফিতির মাধ্যম
  • প্রাচীন রোম, গ্রীস, মধ্যপ্রাচ্যে গ্রাফিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে
  • আধুনিক গ্রাফিতি হিপহপ সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত
  • গ্রাফিতি শিল্প ও ভাণ্ডাল্যের দুই দিক বিদ্যমান

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - গ্রাফিতি

২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

এই গ্রাফিতিটি শিক্ষার্থীরা পুনরায় আঁকেন।

২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

ছাত্র আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছিল।

২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

এই গ্রাফিতিটি মুছে ফেলা হয় এবং পরে পুনঃস্থাপন করা হবে।

২ জানুয়ারী ২০২৫, ৬:০০ এএম

শিক্ষার্থীদের গ্রাফিতি আঁকা ইউল্যাব ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইউল্যাব ক্যাম্পাসে দুই শিক্ষার্থী গ্রাফিতি আঁকেন, যা পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রত্যাহার করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনার গ্রাফিতি মুছে ফেলার ঘটনা ঘটেছে।

২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

শেখ হাসিনার গ্রাফিতিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মুছে ফেলা হয়েছে।