খালিয়াজুরী: নেত্রকোণার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা
বাংলাদেশের নেত্রকোণা জেলার অন্তর্গত খালিয়াজুরী উপজেলা, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের অধিকারী একটি প্রশাসনিক এলাকা। ২৪°-৪১´ উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১°-০৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত এই উপজেলার উত্তরে মোহনগঞ্জ উপজেলা এবং সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলা, পূর্বে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলা এবং পশ্চিমে মদন উপজেলা অবস্থিত।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
কথিত আছে, এক সময় খালিয়াজুরীতে কামরূপের রাজধানী ছিল। চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যভাগে জিতারী নামক এক সন্ন্যাসীর আগমনের পর এ অঞ্চল কামরূপের শাসন থেকে মুক্ত হয়। পরবর্তীতে, খালিয়াজুরী পরগনা ভাটি অঞ্চলের ঈশাখাঁর শাসনাধীন ছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীতে এটি হোমবংশীয়দের শাসনাধীন হয়। ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহ জেলা বন্দোবস্তের সময়, রামশংকর চৌধুরী প্রমুখ কয়েকজন এ পরগনার মালিক ছিলেন। ১২০৪ বঙ্গাব্দে, মালিকগণ ঋণের কারণে পরগনার অংশবিশেষ বিক্রি করে দেন এবং পরবর্তীতে ধানকুড়ার জমিদারগণ খালিয়াজুরী পরগনার মালিক হন। ময়মনসিংহ গীতিকার মহুয়া গীতিনাট্যের নায়ক নদের চাঁদের বাড়ি খালিয়াজুরীতে বলে কথিত আছে।
প্রশাসনিক গঠন:
১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে খালিয়াজুরী কেন্দুয়া থানার একটি ফাড়ি থানা হিসেবে স্থাপিত হয় এবং ১৬ জুন ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে পূর্ণাঙ্গ থানায় রূপান্তরিত হয়। সপ্তম পর্যায়ে ১৯৮৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর এটিকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। বর্তমানে এ উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন রয়েছে।
জনসংখ্যা ও ধর্ম:
মুসলমান, হিন্দু এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ খালিয়াজুরীতে বাস করে। মুসলমানদের অধিকাংশই সুন্নি সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। হিন্দুদের মধ্যে নমঃদাস পদবীধারীদের সংখ্যা বেশি।
অর্থনীতি:
ধান এই উপজেলার প্রধান কৃষি ফসল। মাছ চাষ ও মাছ ধরা একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস। ১২,১২৮টি জেলে পরিবারের ৩৬,৩৫৪ জন মাছ ধরার সাথে জড়িত। নৌকা তৈরি এ অঞ্চলের অন্যতম দারু শিল্প।
শিক্ষা ও সংস্কৃতি:
খালিয়াজুরীর শিক্ষার হার ৩৫.৬৮%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে শালদিঘা জিজি উচ্চ বিদ্যালয়, খালিয়াজুরী উচ্চ বিদ্যালয়, এবং কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়। একমাত্র বার্ষিক বিনোদন হলো শ্রাবণ মাসের শেষ দিনে মনষাপূজা উপলক্ষে ইছাপুর ও খলাপাড়া গ্রামবাসী কর্তৃক আয়োজিত নৌকা বাইচ। উকিল মুন্সী নামে একজন বাউল গায়কের গান এ এলাকায় জনপ্রিয়।
প্রাকৃতিক সম্পদ:
ধনু, পিয়াইন, সুরমা ও চিনাই নদী এবং বিভিন্ন বিল (রাহুল বিল, রুসকি বিল, পাগলা বিল, কেউরিয়া বিল, ধ্বরাজ বিল) এ উপজেলার প্রাকৃতিক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত।
আরও তথ্য:
খালিয়াজুরী সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য আমরা আপনাকে আশ্বস্ত করছি যে, আমরা ভবিষ্যতে এই নিবন্ধটি আরও সম্পূর্ণ করব।