২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। এই সংস্কারের লক্ষ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় একটি সার্চ কমিটি গঠন করে। এই পাঁচ সদস্যের কমিটিতে ছিলেন সাবেক জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন জোবায়েদুর রহমান রানা (আহ্বায়ক), সাবেক হকি খেলোয়াড় মেজর (অব.) ইমরোজ আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, ক্রীড়া সংগঠক মহিউদ্দিন আহমেদ বুলবুল এবং ক্রীড়া সাংবাদিক এমএম কায়সার।
কমিটির দায়িত্ব ছিল বিদ্যমান ক্রীড়া ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন, বোর্ড ও সংস্থাগুলির গঠনতন্ত্র, নির্বাচন প্রক্রিয়া, এবং কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাব সরকারকে উপস্থাপন করা। প্রাথমিকভাবে দুই মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীতে তা অনির্দিষ্টকালের জন্য বৃদ্ধি করা হয়।
কমিটির কাজের ধীরগতি ও বিলম্বের কারণে বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থার নেতৃত্ব পদে অনীহা দেখা দেয়। অনেকেরই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে দায়িত্ব নিতে অনীহা প্রকাশ করে। সার্চ কমিটি শুরুতে ৯টি ক্রীড়া ফেডারেশনের জন্য অ্যাডহক কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেয় এবং পরবর্তীতে আরও কিছু ফেডারেশনের প্রস্তাব জমা দেয়। তবে প্রথম ৯টি কমিটি ঘোষণার পর বাকিগুলির ঘোষণা দীর্ঘদিন ধরে বিলম্বিত হয়।
কমিটির কাজ শুধুমাত্র কিছু মুখ বদলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার অভিযোগ ওঠে। ক্রীড়া উপদেষ্টা ‘সিস্টেমের’ পরিবর্তনের কথা বলেও, কোন বাস্তব পরিবর্তন আসে নি। জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলির কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়, কিন্তু নতুন কমিটি গঠনেও বিলম্ব হয়।
সার্বিকভাবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে ক্রীড়াঙ্গনে সংস্কারের কাজ খুব একটা এগিয়ে যায়নি। ফেডারেশনগুলির গঠনতন্ত্র সংশোধন ও জেলা-বিভাগীয় কমিটি গঠন ব্যাপকভাবে বিলম্বিত হয়। ক্রীড়াঙ্গনে সুশাসন ও দুর্নীতি দমনের জন্য একটি সুষ্ঠু ও কার্যকর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।