কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মুক্ত সমুদ্রের বুকে অবস্থিত এক অপূর্ব সৈকত। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় অবস্থিত এই সৈকতটি ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৩ কিলোমিটার প্রশস্ত। এর অপরূপ সৌন্দর্যের জন্য একে সাগরকন্যা বলা হয়। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের বিশেষত্ব হলো একই স্থান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দর্শন করা যায়, যা একে বিশ্বের অনন্য সৈকত সমূহের কাছে নিয়ে এসেছে।
ইতিহাস:
কুয়াকাটা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে বলা হয়, ১৮ শতকে বার্মা থেকে বিতাড়িত রাখাইন জনগোষ্ঠী এই এলাকায় আশ্রয় নেয়। পানীয় জলের অভাবে তারা কুপ খনন করে, সেখান থেকেই ‘কুয়াকাটা’ নামকরণ। এখানে রাখাইনদের ঐতিহাসিক বসতি, প্রাচীন কুয়া, বৌদ্ধ মন্দির এখনো বিদ্যমান।
ভৌগোলিক অবস্থান ও পরিবেশ:
কুয়াকাটা বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত। এখানকার বালুময় সৈকত, ঝাউবন, নারিকেল বাগান, গঙ্গামতি সংরক্ষিত বন পর্যটকদের মনোমুগ্ধ করে। শীতকালে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখিও দেখা যায়।
অর্থনীতি:
মৎস্য ও পর্যটন কুয়াকাটার প্রধান অর্থনৈতিক ভিত্তি। এখানে মৎস্য ব্যবসা, শুঁটকি প্রস্তুতকরণ, হোটেল-মোটেল, গাইড সেবা, নৌকা ভ্রমণ প্রমুখ কর্মকাণ্ড চালু আছে।
দর্শনীয় স্থান:
কুয়াকাটা শুধুমাত্র সৈকত নয়, এখানে ফাতরার বন, লেবুর চর, শুঁটকি পল্লী, ক্রাব আইল্যান্ড (লাল কাঁকড়ার দ্বীপ), গঙ্গামতির জঙ্গল, রাখাইন পল্লী, বৌদ্ধ মন্দির ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান রয়েছে।
যোগাযোগ:
ঢাকা থেকে সড়কপথে এবং নদীপথে কুয়াকাটা যাওয়া যায়। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সড়কপথে যাতায়াত অনেক সহজ হয়েছে।
উপসংহার:
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত প্রকৃতির অপূর্ব এক অনন্য সৃষ্টি। সৈকতের সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক গুরুত্ব, এবং বিভিন্ন পর্যটন কর্মকাণ্ড কুয়াকাটাকে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।