কারখানা নির্বাচন: স্থান নির্বাচনের গুরুত্ব ও বিবেচ্য বিষয়সমূহ
কারখানা স্থাপন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত। একটি কারখানার সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে তার অবস্থানের উপর। অর্থনৈতিক দিক, উৎপাদন ব্যয়, বাজারের নৈকট্য, শ্রমিক সরবরাহ, কাঁচামালের সহজলভ্যতা - এ সব বিষয়ই কারখানার স্থান নির্বাচনে প্রভাব ফেলে। এই নিবন্ধে আমরা কারখানা নির্বাচনে বিবেচ্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ বিস্তারিত আলোচনা করব।
- *কারখানার স্থান নির্বাচনে তিনটি ধাপ:**
কারখানার স্থান নির্বাচন একটি ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া। এটি সাধারণত তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়:
1. **অঞ্চল নির্বাচন:** এ ধাপে বাজারের নিকটত্ব, কাঁচামালের সহজলভ্যতা, পরিবহন ব্যবস্থা, শ্রমিকের উপলব্ধতা, বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানির সুবিধা, মজুরি হার, আবহাওয়া, জনসংখ্যা, সম্পদ ও আয়ের বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়।
2. **জনবসতি এলাকা নির্বাচন:** অঞ্চল নির্বাচনের পর, জনবসতি এলাকা নির্বাচন করা হয়। এতে শ্রমিক সরবরাহ, মজুরি হার, শিল্পের ধারণা, বসতি এলাকার বৈশিষ্ট্য, আইন ও করের সীমাবদ্ধতা, পরিষেবা (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, আবর্জনা ব্যবস্থাপনা), পুলিশ ও অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা, বাসস্থানের অবস্থা, জনসংখ্যা ও আয়ের বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়।
3. **নির্দিষ্ট স্থান নির্বাচন:** অঞ্চল ও জনবসতি এলাকা নির্বাচনের পর, জমির আকার, পরিবহন ব্যবস্থা, সেবা (পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, যোগাযোগ), আবাসিক ও ব্যবসায়িক কেন্দ্রের নৈকট্য, খাওয়ার সুবিধা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে নির্দিষ্ট স্থান নির্বাচন করা হয়।
- *আলফ্রেড ওয়েবারের তত্ত্ব:**
কারখানার স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রখ্যাত জার্মান অর্থনীতিবিদ আলফ্রেড ওয়েবারের তত্ত্ব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছিলেন, মোট পরিবহন ব্যয় সর্বনিম্ন যে স্থানে, সেখানেই শিল্প স্থাপন সবচেয়ে লাভজনক। এটিকে 'সন্নিকটবাদ' বলা যায়।
- *স্থান নির্বাচনের প্রক্রিয়া:**
কারখানার অবস্থান নির্বাচন করার জন্য বিভিন্ন সম্ভাব্য স্থানের উপাদানসমূহের ব্যয় বিশ্লেষণ করা হয়। মোট ব্যয় কম যে স্থান, সেখানেই কারখানা স্থাপন করা লাভজনক।
- *উদাহরণ:**
গাজীপুরের শিল্প অঞ্চলগুলোতে কারখানা স্থাপন প্রসঙ্গে বিবেচনা করার জন্য কাঁচামালের উৎস, পরিবহন ব্যবস্থা, শ্রমিক সরবরাহ, বাজারের নিকটত্ব, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের সুবিধা, এবং আবাসিক সুযোগ -সব দিক বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।
- *শেষ কথা:**
কারখানা স্থাপন একটি জটিল প্রক্রিয়া। সফলভাবে কারখানা স্থাপনের জন্য অনেক বিষয়ই বিবেচনা করা প্রয়োজন। এই নিবন্ধে উল্লেখিত বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে সাবধানে কারখানার অবস্থান নির্বাচন করা উচিত।
disambiguesTitle
কারখানা নির্বাচন: স্থান নির্বাচন, অবস্থান নির্ণয়
কারখানার স্থান নির্বাচন ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অঞ্চল, জনবসতি এলাকা ও নির্দিষ্ট স্থান - তিন ধাপে কারখানার স্থান নির্বাচন করা হয়।
বাজারের নৈকট্য, কাঁচামালের সহজলভ্যতা, শ্রমিক সরবরাহ, পরিবহন ব্যবস্থা - গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়।
আলফ্রেড ওয়েবারের সন্নিকটবাদ তত্ত্ব কারখানা নির্বাচনে প্রযোজ্য।
মোট ব্যয় কম যে স্থান, সেখানেই কারখানা স্থাপন লাভজনক।