জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর): বাংলাদেশের অর্থনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বাংলাদেশের অর্থনীতির কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। ১৯৭২ সালে ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আদেশ, ১৯৭২’ এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০০৯ সালের আইন নং ১২ এর মাধ্যমে এর কাঠামো সংশোধিত হয়। এনবিআর বাংলাদেশে কর নীতিমালা ও কর আইনের প্রধান নিয়ন্ত্রক। এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সাথে সংযুক্ত।
- *এনবিআরের প্রধান দায়িত্ব:** শুল্ক ও কর আরোপ এবং আদায় করা। এটি বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ৮৫% রাজস্ব সংগ্রহ করে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এনবিআর প্রায় ৯৭% কর রাজস্ব সংগ্রহ করে থাকে।
- *কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা:**
- ১৯৯৫ সালে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিল ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা।
- ২০০৭ সালে চেয়ারম্যান বাদিউর রহমানের অবসর গ্রহণ (তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়)।
- ২০১৮ সালে হাইকোর্টের রবির ব্যাংক হিসাব অবমুক্ত করার নির্দেশ।
- ২০১৮ সালে জ্বালানীতে কর থেকে ১২৪.৪ বিলিয়ন টাকা সংগ্রহ।
- ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে এনবিআর সার্ভার লঙ্ঘন।
- ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) কর বৃদ্ধির পরিকল্পনায় সন্তুষ্ট না হওয়া।
- এনবিআরের প্রায় ১০ হাজার মামলা আদালতে বিচারাধীন।
- ২০২১ সাল থেকে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সুবিধা চালু।
- *এনবিআরের গঠন:** এনবিআরের একজন চেয়ারপার্সন এবং আটজন সদস্য রয়েছে (চারজন প্রত্যক্ষ কর ও চারজন পরোক্ষ করের জন্য)। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব বোর্ডের পদাধিকারী চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেন। এনবিআরের অধীনে ৪৫টি বিভাগ/পরিচালনা রয়েছে।
- *ভ্যাট ও সমালোচনা:** ভ্যাট সরকারের রাজস্বের প্রধান উৎস হলেও, এটি একটি রিগ্রেসিভ কর হিসেবে সমালোচিত, কারণ এটি দরিদ্রদের জন্য অধিক বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। তবে, কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ভ্যাট কিছু ক্ষেত্রে প্রগতিশীলও হতে পারে।
- *উপসংহার:** এনবিআর বাংলাদেশের রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থার মেরুদণ্ড। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতায় এর ভূমিকা অপরিসীম। সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জনগণের সহযোগিতার মাধ্যমে এনবিআর আরও কার্যকর ও জনকল্যাণমুখী ভূমিকা পালন করতে পারে।