বিচারপতি ওবায়দুল হাসান: জীবনী ও কর্মজীবন
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীন (জন্ম: ১১ জানুয়ারি ১৯৫৯) একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী বিচারপতি। তিনি বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার ছয়াশী (হাটনাইয়া) গ্রামে জন্মগ্রহণকারী ওবায়দুল হাসানের পিতার নাম আখলাকুল হোসাইন আহমেদ এবং মাতার নাম বেগম হোসনে আরা হোসাইন। তার পিতা মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক ছিলেন এবং গণপরিষদের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধান রচনায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং পরবর্তীতে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি জেলা আদালতে এবং ১৯৮৮ সালে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০৫ সালে তিনি আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৯ সালের ৩০শে জুন তিনি হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ৬ঠা জুন স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ২০১২ সালে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৩ই ডিসেম্বর ২০১২ সালে চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০১৫ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০২০ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ২০২২ সালে তিনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য গঠিত অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর তাকে দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ২০২৪ সালের ১০ই আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন।
ওবায়দুল হাসান ‘অবর্ণনীয় নির্মমতার চিত্র: একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ: একজন যুদ্ধশিশুর গল্প ও অন্যান্য’ গ্রন্থের লেখক। তিনি বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখতেন। তার স্ত্রী নাফিসা বানু বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ পরিচালনা পরিষদের সদস্য (ফিন্যান্স) এবং পুত্র আহমেদ সাফকাত হাসান একজন আইনজীবী।
তার ভাই সাজ্জাদুল হাসানও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।