বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক একটি দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংস্কার কমিশন, বুদ্ধিজীবী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। ২০২৪ সালের ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের আয়োজনে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি ভার্চুয়ালি সংলাপে অংশগ্রহণ করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তিনি জাতীয় ঐক্য, গণতন্ত্রের উত্তরণ, সংস্কার ও নির্বাচনের গুরুত্বের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না।’ তিনি ১৭ বছর বয়সে ভোটার হওয়ার পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংলাপে বলেছেন, সংস্কার নিয়ে যত বেশি সময় যাবে, সমস্যা তত বাড়বে। তিনি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম সংস্কারের দাবী জানান। জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তিসঙ্গত সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে দিতে প্রস্তুতির কথা জানান। তিনি জুলাই আন্দোলনে নিহতদের বিচারের দাবি জানান।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার ও জবাবদিহি ব্যবস্থার উপর জোর দেন। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধের আহ্বান জানান। অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য কর্মসংস্থান ও জনগণের স্বস্তির উপর জোর দেন।
সংলাপে আরও অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা, সংস্কার কমিশনের প্রধানরা, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনে নিহতদের স্বজনরা। সংলাপে সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়ার অভিযোগ তোলা হয়। দ্রব্যমূল্য, কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তার মতো বিষয়ে জনগণকে স্বস্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সংলাপে জাতীয় ঐক্য, সংস্কার এবং নির্বাচন-এ তিনটি বিষয়ের সমন্বয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য শেষ পর্যায়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন গঠনের কথা বলা হয়।