রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) হলো রাশিয়ার প্রধান নিরাপত্তা সংস্থা এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কেজিবির প্রধান উত্তরাধিকারী। ১৯৯৫ সালে ফেডারেল কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (এফএসকে)-এর পুনর্গঠনের মাধ্যমে এফএসবি গঠিত হয়। এফএসবি রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ ও সীমান্ত নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ, গোয়েন্দা কার্যক্রম, এবং গুরুতর অপরাধের তদন্তের দায়িত্ব পালন করে। মস্কোর লুবিয়ানকা স্কোয়ারে এর সদর দপ্তর অবস্থিত।
এফএসবি রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির প্রতি জবাবদিহি করে এবং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক এর পরিচালক নিযুক্ত হয়। ২০০৩ সালে, বর্ডার গার্ড সার্ভিস এবং ফেডারেল এজেন্সি অফ গভর্নমেন্ট কমিউনিকেশন অ্যান্ড ইনফরমেশন (এফএপিএসআই) এর অংশ এফএসবি-তে অন্তর্ভুক্ত হয়। এতে সাবেক সোভিয়েত দেশগুলিতে গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি পায়, যা পূর্বে কেজিবির পঞ্চম পরিষেবা পরিচালনা করত।
এফএসবি-এর ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি জড়িত। ১৯৯৮ সালে ভ্লাদিমির পুতিন এফএসবি পরিচালক নিযুক্ত হন এবং পরবর্তীতে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি হন। ১৯৯৯ সালে নিকোলাই পাত্রুশেভ এফএসবি পরিচালক হন। বর্তমান পরিচালক আলেকজান্ডার বোর্তনিকভ।
এফএসবি বিভিন্ন সময়ে সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। এতে দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গোপন পুলিশের কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯৯ সালের মস্কোতে আবাসিক ভবনের বোমা হামলা এফএসবি কর্তৃক পরিকল্পিত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও, ইউক্রেন আগ্রাসনের পূর্বে এফএসবি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা ও প্রভাব বিস্তারের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
২০২২ সালের ইউক্রেন যুদ্ধে এফএসবি-এর ভূমিকা বিতর্কিত। ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থা অভিযোগ করেছে এফএসবি অভিযানের নিরাপত্তা ব্যর্থ করেছে এবং তাদের সদস্যরা গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস করেছে। এছাড়াও, রাশিয়ার বিরোধীদের ওপর হামলার জন্য এফএসবি দায়ী বলে অভিযোগ রয়েছে।
এফএসবি-এর কাঠামো বেশ জটিল। এটিতে বিভিন্ন বিভাগ ও অধিদপ্তর রয়েছে যা দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করে। এছাড়া সেনাবাহিনী ও অন্যান্য সামরিক প্রতিষ্ঠানে এর অধীনে প্রশাসন রয়েছে।
সার্বিকভাবে, এফএসবি রাশিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এর কার্যকলাপ ও প্রভাব নিয়ে বহু প্রশ্ন ও সমালোচনা রয়েছে।