উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হলেন বাংলাদেশের উপজেলা পর্যায়ের প্রশাসনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলার সকল প্রশাসনিক, উন্নয়নমূলক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করেন। ইউএনওরা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং সাধারণত সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার।
১৯৮২ সালে, তৎকালীন সামরিক শাসক জেনারেল হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের আমলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার অংশ হিসেবে উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তনের সাথে সাথে ইউএনও পদের সৃষ্টি হয়। এর আগে প্রতিটি জেলায় মহকুমা থাকত এবং মহকুমা প্রশাসক (এসডিও) সেখানকার প্রশাসন পরিচালনা করতেন। উপজেলা গঠনের পর, থানা নির্বাহী অফিসার (টিএনও) পদকে ইউএনও পদে রূপান্তরিত করা হয়।
ইউএনওর দায়িত্ব ও ক্ষমতা ব্যাপক। তিনি উপজেলা পরিষদের সচিব হিসেবে কাজ করেন এবং উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, তিনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় নেতৃত্ব দেন। সরকারি তহবিল ব্যয়ের তত্ত্বাবধান, উন্নয়ন কর্মকান্ডের তদারকি, জনসাধারণের সেবা প্রদান ইত্যাদি ইউএনও'র অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
২০২৩ সালে, হাইকোর্টের একটি রায়ে উপজেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ইউএনও'র অবাধ ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এই রায় উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যানের ক্ষমতাকে আরও সুসংহত করেছে। তবে, ইউএনও'র প্রশাসনিক ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের নেতৃত্বদানের দায়িত্ব অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ কারণ তিনি উপজেলা পর্যায়ে সরকারের প্রতিনিধি এবং জনগণের সাথে সরকারের সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।