ইসরাইলের সামরিক অভিযান

আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪:০৬ পিএম

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সামরিক অভিযান ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে শুরু হয় এবং বর্তমানেও চলছে। এটি ইতিহাসের অন্যতম মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক সামরিক অভিযান বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। দু মাসেরও কম সময়ে ইসরাইলের এই আক্রমণ আলেপ্পো, মারিউপল অথবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির উপর মিত্রবাহিনীর বোমাবর্ষণের চেয়েও বেশি ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করেছে। ইসরাইলের আক্রমণে বেসামরিক লোকজনের মৃত্যুর সংখ্যাও ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন তিন বছরব্যাপী অভিযানের চেয়েও বেশি।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী কোন ধরণের বোমা ও অস্ত্র ব্যবহার করছে তা স্পষ্ট করে জানায়নি। তবে, ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহকৃত বিস্ফোরকের টুকরো ও আক্রমণের ভিডিও বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, বেশিরভাগ বোমা যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি, যার মধ্যে রয়েছে ৯০০ কিলোগ্রাম ওজনের ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা। গাজায় নিহতের সংখ্যা ২০,০০০ ছাড়িয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানালেও ইসরাইল তাদের অভিযান অব্যাহত রাখছে।

ইসরাইলের দাবি, ৭ই অক্টোবর হামাসের সীমান্ত পেরিয়ে হামলার প্রতিক্রিয়ায় তারা হামাসের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। ওই হামলায় হামাস ১২০০ লোককে হত্যা এবং ২৪০ জনকে বন্দী করে নিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বাইডেন প্রশাসন ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে, তবে ইসরাইলের নির্বিশেষে বোমা আক্রমণের নিন্দা করেছেন।

গাজার ধ্বংসের পরিমাণ ভয়াবহ। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে গাজার উত্তরাঞ্চলে ভবনের দুই-তৃতীয়াংশ এবং দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে এক-চতুর্থাংশ ভবন ধ্বংস হয়েছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ এবং দোকানপাট ধ্বংস হয়েছে। জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা বলছেন ৭০% স্কুল ভবন ধ্বংস হয়েছে।

ইসরাইল বেসামরিক লোকজনের মৃত্যুর জন্য হামাসকে দায়ী করে। তাদের দাবি হামাস বেসামরিক অবকাঠামো ব্যবহার করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন গাজার ধ্বংসযজ্ঞ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনীর জার্মানিতে বোমাবর্ষণের চেয়েও বেশি। ইসরাইল ২০০০ পাউন্ড ওজনের 'বাংকার বাস্টার' বোমা, স্পাইস বোমা এবং ডাম্ব বোমা ব্যবহার করছে বলে অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

ইসরাইলের উদ্দেশ্য হামাসকে ধ্বংস করা এবং বন্দীদের উদ্ধার করা। ১১ সপ্তাহের যুদ্ধে ইসরাইল হামাসের অনেক স্থান ও সুড়ঙ্গ ধ্বংস করেছে এবং হাজার হাজার যোদ্ধাকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে। তবে, বন্দীদের পরিবারেরা উদ্বিগ্ন যে বোমাবর্ষণের কারণে তাদের প্রিয়জনরা বিপদে পড়তে পারে। ইসরাইল-গাজা যুদ্ধের এই ধ্বংসাত্মক পরিণতি আন্তর্জাতিকভাবে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর ইসরাইল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে।
  • বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ইতিহাসের অন্যতম ধ্বংসাত্মক অভিযান।
  • হাজার হাজার বেসামরিক লোক নিহত এবং আহত হয়েছে।
  • ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ‘বাংকার বাস্টার’সহ বিভিন্ন ধরণের বোমা ব্যবহার করছে।
  • আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - ইসরাইলের সামরিক অভিযান

১৯ ডিসেম্বর

ইসরাইল সিরিয়ায় সামরিক অভিযান চালিয়েছে।

২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

ইসরাইলি অভিযানের ফলে গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে এবং এর পরিচালকসহ কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মীকে আটক করা হয়েছে।