আহসান উল্লাহ: বাংলাদেশের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা
আহসান উল্লাহ (২ ডিসেম্বর, ১৯৪২ - ৭ জুলাই, ২০০৭) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন অসাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার অদম্য সাহস ও বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। তিনি ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার আহমেদপুর গ্রামে আমিন উল্লাহ ও জরিফা খাতুনের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তার স্ত্রীর নাম নূরজাহান বেগম এবং তাঁর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে ছিল।
পাকিস্তান নৌবাহিনীতে চাকরিরত আহসান উল্লাহ ১৯৭১ সালে ফ্রান্সের তুলন নৌঘাঁটিতে প্রশিক্ষণে অবস্থান করছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ফ্রান্স থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট মোংলা বন্দরে তার নেতৃত্বে ৪০ জন নৌকমান্ডো অসাধারণ সাহসিকতার সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন পরিচালনা করেন। এই অপারেশন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। মোংলা বন্দরের জাহাজগুলোতে লিমপেট মাইন স্থাপনের মাধ্যমে তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই অপারেশনে কলকাতার আকাশবাণী থেকে একটি নির্দিষ্ট গানের সময়সূচী অনুসারে তাদের কাজ শুরু করার ঘটনাও ইতিহাসে স্মরণীয়।
অন্যদিকে, আহসান উল্লাহ মোল্লা (১৮৭৬-১৯৩৯) নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার জাত আমরুল গ্রামের একজন প্রভাবশালী জমিদার, সমাজসেবক ও রাজনীতিক ছিলেন। তিনি মহাত্মা গান্ধী, শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শরৎচন্দ্র বসু প্রমুখের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলেন। তিনি অবিভক্ত বাংলার লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সদস্যও ছিলেন। দানশীলতা ও সমাজসেবার জন্য তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। তার নামে আত্রাইয়ে আহসান উল্লাহ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় এবং আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন স্থাপিত।