আসাদ মিয়া

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

শহীদ আসাদ: ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের এক অমর নায়ক

আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, জনসাধারণের কাছে পরিচিত শহীদ আসাদ, ছিলেন ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনের একজন অন্যতম পথিকৃৎ এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রনেতা। ১৯৪২ সালের ১০ই জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামের হাতিরদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতা আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ আবু তাহের হাতিরদিয়া সাদত আলী হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও হেডমাষ্টার ছিলেন এবং মাতা মতি জাহান খাদিজা খাতুন ছিলেন নারায়নগঞ্জ আই.ই.টি (ইসলামি এডুকেশন ট্রাস্ট) গার্লস প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা।

শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করে আসাদ জগন্নাথ কলেজ (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) এবং এম.সি কলেজে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ১৯৬৬ সালে বি.এ এবং ১৯৬৭ সালে এম.এ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের এম.এ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

ছাত্রজীবনে আসাদ ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি ঢাকা হল (বর্তমান শহীদুল্লাহ হল) শাখার পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি এবং পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (ইপসু-মেনন গ্রুপ), ঢাকা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি কৃষক সমিতিতেও সক্রিয় ছিলেন এবং মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাষানীর নির্দেশনায় শিবপুর, মনোহরদী, রায়পুরা এবং নরসিংদী এলাকায় কৃষক সমিতিকে সংগঠিত করার কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। গরিব ও অসহায় ছাত্রদের শিক্ষার অধিকার বিষয়ে তিনি সর্বদা সচেতন ছিলেন এবং শিবপুর নৈশ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

আইয়ুব খানের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৬৯ সালে ছাত্র আন্দোলনে আসাদ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফা দাবী এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আসামীদের মুক্তির দাবিতে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ২০ জানুয়ারি, ১৯৬৯ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পাশে চাঁন খাঁ'র পুল এলাকায় মিছিলে অংশগ্রহণের সময় পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। তার মৃত্যু ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং আন্দোলনে নতুন উত্তাপ যোগায়।

আসাদের মৃত্যুর পর, তার স্মৃতিরক্ষার্থে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। ২০১৮ সালে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য তাকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়। তার রক্তমাখা শার্ট আজও বাঙালি জাতির শোক ও গৌরবের প্রতীক। শহীদ আসাদের আত্মত্যাগের স্মৃতি সর্বদা জাতির মনে স্মরণীয় থাকবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনের পথিকৃৎ ছাত্রনেতা
  • ২০ জানুয়ারি ১৯৬৯ পুলিশের গুলিতে শহীদ
  • ১৯৪২ সালে নরসিংদীতে জন্ম
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে এম.এ শেষ বর্ষের ছাত্র
  • পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের নেতা
  • ২০১৮ সালে স্বাধীনতা পদক লাভ

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - আসাদ মিয়া

১ ডিসেম্বর ২০২৪

আসাদ মিয়া লালমনিরহাটের কমলাবাড়ির চাষি, ফুলকপির দাম কম থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে।