আলাউর রহমান: বাংলাদেশ থেকে ব্রিটিশ সংগীতের তারকা
আলাউর রহমান (জন্ম: ১৯৬০, আলাগদি, জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ, সিলেট, বাংলাদেশ) একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সংগীত শিল্পী। তিনি তার মধুর কণ্ঠ এবং আবেগঘন গানের জন্য বহুল পরিচিত। তার শৈশব কেটেছে বাংলাদেশের সিলেটে। মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং এইড হাই স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি হামদ, নায়াত, কাসিদা এবং অন্যান্য ধর্মীয় গানের সাথে বাংলাদেশের জনপ্রিয় গানও গাইতেন। ১৯৭৭ সালে ১৪ বছর বয়সে তিনি তার পরিবারের সাথে যুক্তরাজ্যে চলে যান। সেখানে পণ্ডিত হরিদাস গাঙ্গুলি বিদ্যালয়ে উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নেন।
১৯৮৫ সালে বিবিসির 'নয়া জিন্দেগী, নয়া জীবন' অনুষ্ঠানে গজল ও আধুনিক গান গেয়ে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই বছরই তার ১২ ট্র্যাকের অভিষেক অ্যালবাম 'স্মরণে পরে' মুক্তি পায়। কুতুবুদ্দিন এর সুর ও আব্দুল মুকিত, নুরুল গনি, দেলোয়ার খান এবং শমশের কুরেশীর কথায় সাজানো এই অ্যালবামটি 'ঝাঁকার মিউজিক' প্রকাশ করে। ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনেও অভিনয় করেন। ১৯৯২ সালে পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশি সম্প্রদায় নিয়ে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৯০ এর দশক থেকে তিনি ব্রিটেনের বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় গায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন এবং অসংখ্য গানের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। মোহাম্মদ রফি, মেহেদী হাসান, গোলাম আলী, নুরুল গনি এবং তালাত মাহমুদের মতো শিল্পীদের প্রভাবে তিনি গান গাওয়া শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় সংগীতের দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং একুশে টেলিভিশন এর 'আযানের কণ্ঠ' হিসেবে নির্বাচিত হন।
আলাউর রহমান ৪০ টিরও বেশি অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন যার মধ্যে হিন্দি ও বাংলা গান রয়েছে। 'বেস্ট অফ আলাউর রহমান' অ্যালবামটি 'সেরেঙ্গেটি সিরোকো' প্রকাশ করে। তার গানে ব্রিটেনে তার জীবনের সাথে মানিয়ে নেওয়া, পরিচয়ের সংকট এবং জীবনে বৈষম্যের প্রতিফলন দেখা যায়। তিনি বিশ্বব্যাপী অসংখ্য পুরষ্কার জিতেছেন, যার মধ্যে জি টিভি, চ্যানেল আই, এটিএন, বাংলা টিভি এবং চ্যানেল এস এর পুরস্কার উল্লেখযোগ্য। ১৯৮৬ সালে রোজি রহমানকে বিয়ে করেন। তাদের দুই ছেলে (রাবি ও রাইদ) এবং এক মেয়ে (আনিকা) রয়েছে।