আদালত অবমাননা

আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৩ পিএম

আদালত অবমাননা: একটা গুরুত্বপূর্ণ আইনি বিষয়

আদালত, বিচারপ্রার্থীদের শেষ আশ্রয়স্থল। রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় আদালতের সম্মান ও মর্যাদা অপরিসীম। তাই আদালত অবমাননার বিষয়টি অত্যন্ত আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে প্রচলিত আইন (দ্য কনটেম্পট অব কোর্টস অ্যাক্ট, ১৯২৬) আদালত অবমাননার স্পষ্ট সংজ্ঞা প্রদান করেনি। ফলে, আদালত অবমাননা কী তা বুঝতে উচ্চ আদালতের আদেশ, নির্দেশনা ও পর্যবেক্ষণের উপর নির্ভর করতে হয়।

আদালত অবমাননা মূলত তিনভাবে ঘটতে পারে:

১. আদালতের অভ্যন্তরে বিচারিক কার্যক্রম চলাকালীন ইচ্ছাকৃতভাবে বিচারক বা আদালতকে অবমাননাকর উক্তি করা অথবা বিচারিক কার্যক্রমে বাধা প্রদান করা।

২. আদালতের রায়, আদেশ বা নির্দেশ অমান্য করা।

৩. আদালতের বাইরে সভা-সমাবেশে, সংবাদমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আদালত, বিচারক অথবা বিচারকার্য নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য প্রচার করা।

সংবিধানের ১০৮ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টকে ‘কোর্ট অব রেকর্ড’ ঘোষণা করা হয়েছে এবং অবমাননার তদন্ত ও শাস্তি প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। ব্রিটিশ আমলে প্রণীত ১৯২৬ সালের আদালত অবমাননা আইন দণ্ডের বিধান রেখেও এর সংজ্ঞা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই আইনটি ভারত ও পাকিস্তানেও প্রচলিত ছিল, কিন্তু তারা পরবর্তীতে ১৯৭১ ও ১৯৭৪ সালে নতুন আইন প্রণয়ন করে।

বাংলাদেশে ২০০৮ সালে আদালত অবমাননা অধ্যাদেশ এবং ২০১৩ সালে আদালত অবমাননা আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে হাইকোর্ট এই আইনকে অবৈধ ঘোষণা করে। ২০২২ সালের নভেম্বরে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়, যার ফলে ১৯২৬ সালের আইনটি বহাল থাকে। ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি, এবং ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান অনুসারে আদালত অবমাননার জন্য বিভিন্ন ধরণের শাস্তির বিধান রয়েছে।

আদালত অবমাননা আইন, ১৯২৬ এবং ২০১৩ সালের অবৈধ ঘোষিত আইন, দুটিরই সমালোচনা রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৩ সালের আইনটি সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক এবং সরকারি কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের অনুচিত সুবিধা প্রদান করে বলে অভিযোগ রয়েছে। আইনটির অস্পষ্টতা এবং বাক স্বাধীনতার উপর এর প্রভাব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিভিন্ন ব্যক্তি, সরকারি কর্মকর্তা এবং সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা রুজু হয়েছে। এই মামলাগুলো আইনের ব্যাখ্যা, বাকস্বাধীনতা ও বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। এই বিষয়ে স্পষ্টতা, সুষ্ঠু আইন প্রণয়ন এবং সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

মূল তথ্যাবলী:

  • আদালত অবমাননা আইন, ১৯২৬ বর্তমানে প্রযোজ্য।
  • ২০১৩ সালের আদালত অবমাননা আইন হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত।
  • আদালত অবমাননা তিন ধরণের: আদালতের অভ্যন্তরে অবমাননা, আদালতের আদেশ অমান্য এবং অবমাননাকর বক্তব্য প্রচার।
  • আদালত অবমাননার জন্য বিভিন্ন ধরণের শাস্তির বিধান রয়েছে।
  • আইনের অস্পষ্টতা, বৈষম্যমূলক বিধান এবং বাকস্বাধীনতার উপর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - আদালত অবমাননা

গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

আদালত অবমাননার অভিযোগে ডা. ফারুক আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

৬ জানুয়ারি ২০২৫

পিপি হাইকোর্টে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।