আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ): বিশ্ব অর্থনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) একটি জাতিসংঘ কর্তৃক অনুমোদিত স্বায়ত্তশাসিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা বিশ্বের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য কাজ করে। ১৯৪৪ সালের ব্রেটন উডস সম্মেলনে এর ধারণা প্রথম উঠে আসে এবং ১৯৪৫ সালের ২৭শে ডিসেম্বর ২৯টি দেশের চুক্তির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন, ডি.সি.তে অবস্থিত।
আইএমএফের প্রধান কাজ হলো বিভিন্ন দেশের মুদ্রানীতি পর্যবেক্ষণ করা এবং আর্থিক সংকটের সময় সদস্য দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল এবং নিয়ন্ত্রণযোগ্য রাখা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা আনা এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করা এর গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে অন্যতম।
আইএমএফের একটি 'বোর্ড অব গভর্নর্স' রয়েছে যা এই সংস্থার সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক পর্ষদ। প্রতিটি সদস্য দেশ একজন গভর্নর নিযুক্ত করে। বর্তমানে ১৮৯টি রাষ্ট্র আইএমএফের সদস্য।
আইএমএফ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া বিপ্লবের পর ইউক্রেনের অস্থায়ী সরকারকে ১৮ বিলিয়ন ডলার সংকটকালীন তহবিল প্রদান করেছিল। সম্প্রতি ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য আরএসএফ (রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফান্ড) তহবিল অনুমোদন করেছে। বাংলাদেশ এই তহবিল থেকে ঋণ গ্রহণকারী এশিয়ার প্রথম দেশ হতে যাচ্ছে।
আইএমএফের ভূমিকা বিশ্ব অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা বজায় রাখে এবং আর্থিক সংকটের সময় সহায়তা প্রদান করে। তবে, আইএমএফের নীতিমালা এবং ঋণ প্রদানের শর্তাবলী নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। কিছু মহল মনে করে যে এই শর্তাবলী উন্নয়নশীল দেশের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।