অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল: মানবাধিকারের অগ্রদূত
১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যে জন্ম নেওয়া অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল (Amnesty International) আজ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ও প্রভাবশালী মানবাধিকার সংস্থা। লন্ডনে অবস্থিত এর সদর দপ্তর থেকে বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশে কাজ করে যাচ্ছে এই বেসরকারি সংস্থাটি। বিচারবহির্ভূত আটক, নির্যাতন, মৃত্যুদণ্ড, রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি, যুদ্ধাপরাধের বিচার, গণহত্যা প্রতিরোধ, নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে অবিরাম লড়াই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মূল লক্ষ্য।
সংগঠনটির ইতিহাসে রয়েছে উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা। ১৯৭৭ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কার এবং ১৯৭৮ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার পুরষ্কার লাভ করে অ্যামনেস্টি। তবে সক্রিয়তা ও প্রতিবেদনের কারণে অনেক দেশের সাথে সংস্থার সম্পর্কের উত্থান-পতন ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২০ সালে ভারত সরকার অ্যামনেস্টির ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ করে দেয় এবং দেশটিতে সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতন, মুসলিমদের উপর নির্যাতন ও হত্যা, দিল্লী দাঙ্গা এবং কাশ্মীরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন ও প্রতিক্রিয়া সরকারের কাছে অনুগ্রহযোগ্য ছিল না।
বাংলাদেশেও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ১৯৮৫ সালে ঢাকায় সংস্থার কর্মকান্ডের সূচনা হয়। বর্তমানে ঢাকা সহ বিভিন্ন স্থানে অ্যামনেস্টির গ্রুপ রয়েছে যারা স্থানীয়ভাবে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে। মানবাধিকার সচেতনতা বৃদ্ধি, কর্মশালা, সেমিনার, প্রতিবেদন প্রকাশ, সরকার ও জনগণকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সচেতন করা ইত্যাদি কাজে নিয়োজিত এই সংস্থা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টা মানবাধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে সরকারের সাথে সম্পর্কের জটিলতা ও বিভিন্ন অভিযোগ সত্ত্বেও, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কাজ মানবাধিকারের আন্দোলনের জন্য অপরিহার্য।