অ্যাডাম ক্রেইগ গিলক্রিস্ট: অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের এক অম্লান স্মৃতি
অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ডাকনাম গিলি, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অম্লান নাম। ১৪ নভেম্বর ১৯৭১ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের বেলিংগেনে জন্মগ্রহণকারী এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ও উইকেট-রক্ষক ক্রিকেটকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছেন তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং এবং দক্ষ উইকেট-রক্ষণের মাধ্যমে। তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ অলরাউন্ডার, যিনি ব্যাট ও গ্লাভস দুই দিকেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
১৯৯২ সালে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক, ১৯৯৬ সালে একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ক্রিকেটে এবং ১৯৯৯ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকের পর, গিলক্রিস্ট অস্ট্রেলিয়ার জন্য ৯৬ টি টেস্ট ও ২৭০ টির বেশি ওডিআই ম্যাচ খেলেছেন। তিনি ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের অধিকারী ছিলেন এবং টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন। তিনি টেস্ট ক্রিকেটে ১০০ টির বেশি ছক্কা মারার প্রথম ব্যাটসম্যান।
গিলক্রিস্ট ৩ টি বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন (১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭)। তিনি টানা তিনটি বিশ্বকাপ ফাইনালে ৫০ রানের বেশি ইনিংস খেলার বিরল রেকর্ডের অধিকারী। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তার ১৪৯ রানের ইনিংস ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয়।
তিনি তার 'ওয়াকিং' নীতির জন্যও পরিচিত, যেখানে নিজেকে আউট মনে করলে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের আগেই তিনি মাঠ ছাড়তেন। এই কারণে বহুবার তাকে ম্যাচ ফি জরিমানাও দিতে হয়েছে।
২০০২ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ৫ ক্রিকেটারের একজন হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ার হল অব ফেমে স্থান পান। তার অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে অবদান অতুলনীয়। অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠদের মধ্যে একজন হিসেবে স্বীকৃত।
২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর, তিনি ক্রিকেট কমেন্টেটর হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার আত্মজীবনী 'ট্রু কালার্স' প্রকাশিত হয়েছে।
স্টিভ ওয়া, রিকি পন্টিং, শেন ওয়ার্ন, কুমার সাঙ্গাকারা, সচিন তেন্ডুলকর, মুত্তিয়া মুরালিধরন সহ অনেক খ্যাতনামা ক্রিকেটারের সাথে তার নাম জড়িত।