সোহাগ গাজী: বাংলাদেশী ক্রিকেটের এক অসাধারণ অধ্যায়
৫ই আগস্ট ১৯৯১ সালে পটুয়াখালীতে জন্মগ্রহণকারী সোহাগ গাজী বাংলাদেশী ক্রিকেটের ইতিহাসে অনন্য এক নাম। তার অভিষেক ঘটে ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের মাধ্যমে। শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে তিনি সবার নজর কেড়েছিলেন। বাংলাদেশের পক্ষে ৬৪তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে তিনি অভিষিক্ত হন। একই বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ানডে অভিষেকের মাধ্যমে তিনি আরও একবার ইতিহাস গড়েন; অভিষেক ম্যাচেই ২৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তিনি গড়েন নতুন বাংলাদেশী রেকর্ড।
সোহাগ গাজী বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অলোক কাপালির পর দ্বিতীয় হ্যাট্রিকের গৌরব অর্জন করেন। ২০১৩ সালের ১৩ই অক্টোবর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত টেস্ট ম্যাচে তিনি এক অভাবনীয় কীর্তি করে যান। একই টেস্ট ম্যাচে তিনি হ্যাট্রিকসহ ৬ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি সেঞ্চুরিও করেন! এই বিরল কীর্তি অর্জনকারী তিনি বিশ্ব ক্রিকেটের প্রথম খেলোয়াড়। একে একে কোরে অ্যান্ডারসন, বিজে ওয়াটলিং এবং ডগ ব্রেসওয়েলকে আউট করে তিনি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেন। এই ম্যাচটি ড্র হলেও সোহাগ গাজী ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরষ্কার পান।
তার দীর্ঘ ক্রিকেট জীবনে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি ২০১৭-১৮ বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগে সেন্ট্রাল জোনের হয়ে ৬ ম্যাচে ২৯ উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকেট শিকারী হন। ২০১৮-১৯ ন্যাশনাল ক্রিকেট লীগে ফার্স্ট-ক্লাস ক্রিকেটে তার ২১তম পাঁচ উইকেট লাভ করেন। তিনি ২০১৮-১৯ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ১৬ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকেট শিকারী হন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্রিকেট দলে খেলেছেন।
পটুয়াখালীর এই অফ স্পিনার বাংলাদেশী ক্রিকেটের জন্য এক মূল্যবান সম্পদ ছিলেন। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তার অবসরের পর তিনি দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে সক্রিয় ছিলেন। সোহাগ গাজীর জীবন ও ক্রিকেট ক্যারিয়ার বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের কাছে সবসময়ই স্মরণীয় থাকবে।