শাপলাপাতা মাছ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা শাপলাপাতা মাছ নিয়ে আলোচনা করব। অনেকের কাছেই এই মাছ অপরিচিত, তাই ইন্টারনেটে অনুসন্ধানকারীদের জন্য এই আর্টিকেলটি উপযোগী হবে।
শাপলাপাতা মাছ নামটি থেকেই বোঝা যায়, এটির আকৃতি শাপলা পাতার মতো। কিন্তু এটি আসলে একটি মাছ, যার আকার অনেক বড় হতে পারে, কয়েক মণ ওজন পর্যন্ত। এটি সমুদ্রবেষ্টিত অঞ্চল এবং বড় নদীগুলিতে পাওয়া যায়। মাছটির ইংরেজি নাম স্টিংরে (stingray) এবং বৈজ্ঞানিক নাম Himantura imbricata। স্থানীয়ভাবে একে শাপলাপাতা, শাকুশ, হাউস পাতা মাছ ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। এটি প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ।
কক্সবাজারে একসময় তিনটি বিশাল শাপলাপাতা মাছ ধরা পড়েছিল, যাদের ওজন ছিল ১২০ কেজি, ৯৫ কেজি এবং ৮০ কেজি। এই ধরনের বৃহৎ আকারের মাছ বহন করা কষ্টসাধ্য। এই মাছ ঢাকা ও চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হয়। আগে প্রতি কেজি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হলেও, বর্তমানে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শাপলাপাতা মাছের চামড়া খুবই মূল্যবান এবং বিদেশে রপ্তানি করা হয়। লেজ থেকে ওষুধও তৈরি করা হয়। এই মাছের ছয় প্রজাতি থাকে এবং বাঘা প্রজাতির শাপলাপাতা মাছ খুবই বিরল। এই ধরনের বৃহৎ আকারের শাপলাপাতা মাছের একটি ১ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
শাপলাপাতা মাছ ধরা এবং বিক্রি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে ১৩০ কেজি ওজনের একটি শাপলাপাতা মাছ ধরা পড়েছিল যা ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী এই মাছ শিকার নিষিদ্ধ। তবে অনেক জেলেই এ বিষয়ে অসচেতন।
শাপলাপাতা মাছের বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে, যার কিছু প্রজাতি বিপন্ন। ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৮ থেকে ১০ প্রজাতির শাপলাপাতা মাছ পাওয়া যায়, যার মধ্যে ২টি মহাসংকটাপন্ন এবং ৩টি সংকটাপন্ন। এই মাছের সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আশা করি এই তথ্য আপনাদের জন্য উপকারী হবে। শাপলাপাতা মাছ সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া গেলে আমরা আর্টিকেলটি আপডেট করব।