শহীদ মিনার: বাংলা ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিস্তম্ভ
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ শহীদ মিনার। এই স্মৃতিস্তম্ভটি বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়ের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
প্রথম শহীদ মিনার:
২১-২২ ফেব্রুয়ারির ঘটনার পর, ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা তাড়াহুড়ো করে একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে। মিনারটি ছিল ১০ ফুট উঁচু ও ৬ ফুট চওড়া। নকশা করেছিলেন বদরুল আলম ও সাঈদ হায়দার। জিএস শরফুদ্দিন এর তদারকি করেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে শহীদ শফিউর রহমানের পিতা অনানুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। কিন্তু ২৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ও সেনাবাহিনী এটি ভেঙ্গে ফেলে।
বর্তমান শহীদ মিনার:
১৯৫৬ সালে আবু হোসেন সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বর্তমান স্থান নির্বাচন করা হয়। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় জনতার আপত্তির মুখে ভাষা আন্দোলনের শহীদ রিক্সাচালক আওয়ালের ৬ বছরের মেয়ে বসিরণকে দিয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৫৭ সালে শিল্পী হামিদুর রহমানের নকশায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৫৮ সালে সামরিক আইন জারির ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আযম খানের আমলে কাজ পুনরায় শুরু হয় এবং ১৯৬৩ সালের শুরুতে শেষ হয়। ২১শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৩ সালে শহীদ আবুল বরকতের মাতা হাসিনা বেগম কর্তৃক উদ্বোধন করা হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী শহীদ মিনারটি ক্ষতিগ্রস্ত করে। স্বাধীনতার পর পুনর্নির্মাণ করা হয়।
অবস্থান:
ঢাকা মেডিকেল কলেজের বহিঃপ্রাঙ্গণে অবস্থিত।
গুরুত্ব:
শহীদ মিনার বাংলা ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচিহ্ন। এটি বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক। প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি, একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।