লন্ডন: ইংল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর লন্ডন, টেমস নদীর তীরে অবস্থিত একটি বিশাল মহানগরী। প্রায় ৮৮ লক্ষ লোকের বাস লন্ডনে, যা যুক্তরাজ্যের জনসংখ্যার ১৩% এরও বেশি। ১৭শ শতক থেকে আজ পর্যন্ত ইউরোপের বৃহত্তম শহর হিসেবে লন্ডনের নাম উল্লেখযোগ্য। ১৯শ শতকে এটি বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে প্রভাবশালী নগরী ছিল, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমানেও এটি বিশ্বের প্রধান আর্থ-বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর অন্যতম।
লন্ডনের ভৌগোলিক বিন্যাস বেশ বিস্তৃত। কোন একটি প্রধান কেন্দ্র নেই। বিভিন্ন স্বতন্ত্র অংশ নিয়ে গঠিত লন্ডনের ইতিহাস ২০০০ বছরেরও বেশি। রোমানদের লন্ডিনিয়াম থেকে শুরু করে, আজকের লন্ডন বহুজাতিক সংস্কৃতির মিশ্রণ।
লন্ডনের জলবায়ু সাধারণত আর্দ্র, বৃষ্টিপাত বেশি হলেও গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৭৫০ মিলিমিটার। গ্রীষ্মের গড় তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস, শীতের ৪ ডিগ্রী।
লন্ডনের মহানগর এলাকা প্রায় ১৬১০ বর্গকিলোমিটার, ৩৩টি প্রশাসনিক বিভাগে বিভক্ত। কেন্দ্রীয় লন্ডন টেমস নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত। ওয়েস্টমিনস্টারে ইংল্যান্ডের জাতীয় সরকারের কার্যালয় অবস্থিত।
লন্ডনের জনসংখ্যা প্রায় ৮৬ লক্ষ, জনঘনত্ব বেশি। ১৯ ও ২০ শতকে বিভিন্ন অভিবাসীদের আগমনের ফলে লন্ডন বহুজাতিক, বহুভাষিক ও বহুসাংস্কৃতিক শহরে পরিণত হয়েছে।
লন্ডনে ১০০-রও বেশি জাদুঘর আছে, যার মধ্যে ব্রিটিশ মিউজিয়াম, ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আলবার্ট মিউজিয়াম, ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম উল্লেখযোগ্য। ট্রাফালগার চত্ত্বরের ন্যাশনাল গ্যালারী, টেট গ্যালারী চিত্রশালা সবাইকে আকর্ষণ করে। হাইড পার্ক, কেনসিংটন গার্ডেনস, রিজেন্টস পার্ক এরকম আরও অনেক উদ্যান রয়েছে।
ক্রীড়ার দিক থেকেও লন্ডনের গুরুত্ব অনেক। আর্সেনাল, টটেনহাম ফুটবল ক্লাব, লর্ডস ক্রিকেট মাঠ, উইম্বলডন টেনিস কোর্ট বিখ্যাত।
লন্ডন যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। এর অর্থনীতির আয়তন প্রায় ৬০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার, বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম মহানগর অর্থনীতি। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির প্রায় এক-চতুর্থাংশ লন্ডন গঠন করে।
৪৩ খ্রিস্টাব্দে রোমানরা লন্ডিনিয়াম শহরের পত্তন করে। ২০০ সাল নাগাদ সিটি অফ লন্ডনের সীমানা নির্ধারণ করে। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স, কিংস কলেজ লন্ডনের খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। লন্ডনের আয়তন ১৬১০ বর্গকিলোমিটার, ৩৩টি রাজনৈতিক এককে বিভক্ত।
লন্ডন একটি নাতিশীতোষ্ণ মহাসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল। ২০২২ সালের জুলাই মাসে লন্ডনের তাপমাত্রা ৪০° সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়, ফলে শহরের বিভিন্ন স্থানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। জলবৈজ্ঞানিক বিশেষজ্ঞদের মতে ২০৫০ সালের মধ্যে লন্ডনে ভূগর্ভস্থ পানি শেষ হয়ে যেতে পারে।