রাশিয়া: বিশাল ভূখণ্ডের রহস্যময় দেশ
রাশিয়া, রুশ ভাষায় Россия (Rossiya), আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ ফেডারেশন (Российская Федерация) নামে পরিচিত, পূর্ব ইউরোপ এবং উত্তর এশিয়ার বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল) আয়তনের এই দেশটি অর্ধ-রাষ্ট্রপতি শাসন ব্যবস্থার অধীনে পরিচালিত হয়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়া স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব পর্যন্ত নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, বেলারুশ, ইউক্রেন, জর্জিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার সাথে সীমান্ত রয়েছে। জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার সাথেও এর সামুদ্রিক সীমান্ত বিদ্যমান।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
রাশিয়ার ইতিহাস ৩য় থেকে ৮ম শতকের মধ্যবর্তী সময়ে পূর্ব স্লাভদের সাথে শুরু হয়। ৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য থেকে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের ফলে বাইজান্টাইন ও স্লাভ সংস্কৃতির এক অসাধারণ মিশ্রণ সৃষ্টি হয়। মঙ্গোলদের আক্রমণের পর মস্কোর গ্র্যান্ড ডিউকরা ক্রমশ ক্ষমতা অর্জন করে এবং কিয়েভান রাশিয়ার উত্তরাধিকারী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে। অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত রাশিয়া বিশাল সাম্রাজ্যে পরিণত হয়, পোল্যান্ড থেকে আলাস্কা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পরবর্তীকাল:
রুশ বিপ্লবের পর রুশ সোভিয়েত ফেডারেটিভ সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক গঠিত হয়, যা পরে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হিসেবে কাজ করে। সোভিয়েত যুগে রাশিয়া উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তিগত সাফল্য অর্জন করে, যেমন- প্রথম মহাকাশযান ও প্রথম নভোচারী। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়া আবার স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পুনর্গঠিত হয়।
অর্থনীতি:
রাশিয়ার অর্থনীতি প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল। প্রচুর তেল ও গ্যাসের ভান্ডার একে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় উৎপাদক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এছাড়াও রাশিয়ার বিশাল খনিজ সম্পদ রয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়া পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হয়, যদিও সরকারের নিয়ন্ত্রণ এখনো বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাশিয়ার অর্থনীতি বিশ্বের দশম বৃহত্তম অর্থনীতি।
ভূগোল ও জনসংখ্যা:
রাশিয়ার বিশাল ভূখণ্ডে বিভিন্ন ধরণের আবহাওয়া ও পরিবেশ বিদ্যমান। উত্তরে তুন্দ্রা, দক্ষিণে মরুভূমি, এবং মাঝে তাইগা এবং স্তেপ বিস্তৃত। ২০১২ সালে রাশিয়ার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৪৩ মিলিয়ন।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- বিশ্বের বৃহত্তম দেশ।
- জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য।
- বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ।
- বিশাল খনিজ ও জ্বালানী সম্পদের অধিকারী।