যাদু মিয়া

মশিউর রহমান: বাংলাদেশের রাজনীতির এক প্রভাবশালী চরিত্র

মশিউর রহমান, যিনি ‘যাদু মিয়া’ নামে বেশি পরিচিত, বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ৯ জুলাই ১৯২৪ সালে তৎকালীন রংপুর জেলার (বর্তমান নীলফামারী জেলার) ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম এই নেতা ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে, তেভাগা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন, এমনকি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী রাজনীতিতেও তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।

তিনি মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর অনুগত শিষ্য ছিলেন এবং ১৯৭৬ সালে ভাসানীর মৃত্যুর পর বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবেও তার নাম উল্লেখযোগ্য। পাকিস্তান আমলে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন এবং বিরোধী দলের উপ-নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আইয়ুব খান বিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিলো অসাধারণ। তিনি ১১-দফা দাবীর পক্ষে জাতীয় পরিষদের সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং গ্রেফতার ও কারাদন্ডের সম্মুখীন হন।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তার ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তীতে তিনি কারারুদ্ধ হন এবং পরে মুক্তি পান। জিয়াউর রহমানের সরকারের আমলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় সিনিয়র মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ফারাক্কা লং মার্চের সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো। ১৯৭৯ সালে এক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার বড় ছেলে শফিকুল গনি স্বপন পরবর্তীতে বাংলাদেশের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মশিউর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একজন বিতর্কিত কিন্তু প্রভাবশালী নেতা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

মূল তথ্যাবলী:

  • মশিউর রহমান, ‘যাদু মিয়া’ নামে পরিচিত
  • ন্যাপের সভাপতি ও আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য
  • জিয়াউর রহমানের সরকারে প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় সিনিয়র মন্ত্রী
  • ভাষা আন্দোলন, ৬-দফা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ
  • ফারাক্কা লং মার্চের সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান
  • বিএনপি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

গণমাধ্যমে - যাদু মিয়া

২২ ডিসেম্বর ২০২৪

তিনি হিলি বাজারের একজন আলু বিক্রেতা এবং আলুর দাম কমার বিষয়ে তাঁর মন্তব্য রয়েছে।