মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন: দুইজন ব্যক্তি
প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, "মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন" নামে দুজন ব্যক্তির উল্লেখ রয়েছে। একজন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অন্যজন একজন ইসলামি পণ্ডিত। এই দুই ব্যক্তিকে পৃথকভাবে বর্ণনা করা হলো:
১. বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন:
এই বেলায়েত হোসেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৭১ সালের ১৪ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার সালদা নদী অঞ্চলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় শহীদ হন। তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে। তার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার গাছুয়া গ্রামে। তার বাবার নাম মাজেদ মিয়া এবং মায়ের নাম বিবি মরিয়ম। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থান করেন এবং সালদা নদী উপ-সেক্টরে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় তাকে কুল্লাপাথর গ্রামের একটি টিলায় অন্যান্য শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সমাহিত করা হয়। এই সমাধিস্থল বর্তমানে কুল্লাপাথর শহীদ স্মৃতিসৌধ হিসেবে পরিচিত।
২. ইসলামি পণ্ডিত মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন:
এই বেলায়েত হোসেন একজন বাংলাদেশী ইসলামি পণ্ডিত, হানাফি সুন্নি আলেম, কারী, শিক্ষাবিদ এবং গবেষক। তিনি নূরানী শিক্ষা পদ্ধতির আবিষ্কারক এবং নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ১৯১০ সালে চাঁদপুর জেলার শাহারাস্তি উপজেলার সূচীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফরিদগঞ্জের বারোপাইকা মাদ্রাসা এবং ঢাকার জামিয়া হোসাইনিয়া আশরাফুল উলুম বড় কাটারা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। তিনি জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা এবং জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম জাফরাবাদ মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। তিনি ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়ার সহ-প্রতিষ্ঠাতা। প্রায় ৬০ বছর গবেষণার পর তিনি “নূরানী শিক্ষা পদ্ধতি” আবিষ্কার করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৭ সালের ২৪ জুন ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাকে মরণোত্তর শায়খুল কুরআন উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
আরও তথ্য: উভয় বেলায়েত হোসেন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেলে, আমরা এই লেখাটি আপডেট করব।