মুঘল সাম্রাজ্য (১৫২৬-১৮৫৭) ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাম্রাজ্য। মধ্য এশিয়ার তুর্কো-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত বাবর ১৫২৬ সালে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদীকে পরাজিত করে এই সাম্রাজ্যের সূচনা করেন। প্রায় তিন শতাব্দী ধরে এই সাম্রাজ্য দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল অঞ্চল শাসন করেছে।
উল্লেখযোগ্য সম্রাট ও তাদের শাসনকাল:
- বাবর (১৫২৬-১৫৩০): মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। পানিপথের প্রথম যুদ্ধে জয়লাভ করেন।
- হুমায়ুন (১৫৩০-১৫৫৬): বাবরের পুত্র। শের শাহের কাছে পরাজিত হয়ে কিছুকাল ভারত ত্যাগ করেন। পরে ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করেন।
- আকবর (১৫৫৬-১৬০৫): হুমায়ুনের পুত্র। মুঘল সাম্রাজ্যের স্বর্ণযুগের সূচনা করেন। রাজনৈতিক কৌশল ও সামরিক শক্তি দিয়ে সাম্রাজ্যের ব্যাপক বিস্তার ঘটান। দীন-ই-ইলাহি নামে নতুন ধর্মের সূচনা করেন।
- জাহাঙ্গীর (১৬০৫-১৬২৭): আকবরের পুত্র। শাসনকালে অর্থনৈতিক উন্নতি হয়।
- শাহজাহান (১৬২৮-১৬৫৮): জাহাঙ্গীরের পুত্র। মুঘল স্থাপত্যের স্বর্ণযুগ। তাজমহল, লালকেল্লা, জামে মসজিদ প্রভৃতি স্থাপনার নির্মাণ করেন।
- ঔরঙ্গজেব (১৬৫৮-১৭০৭): শাহজাহানের পুত্র। সাম্রাজ্যের সীমানা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। জিজিয়া কর পুনঃপ্রবর্তন করেন।
মুঘল সাম্রাজ্যের উল্লেখযোগ্য দিক:
- স্থাপত্য: তাজমহল, লালকেল্লা, হুমায়ূনের মাজার, ফতেহপুর সিক্রি, আগ্রা দুর্গ, লাহোর দুর্গ ইত্যাদি।
- প্রশাসন: কেন্দ্রীভূত প্রশাসন ব্যবস্থা। মনসবদারি প্রথা।
- অর্থনীতি: কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়ন। বাণিজ্যের বৃদ্ধি।
- সংস্কৃতি: ফারসি ও উর্দু ভাষার প্রসার। হিন্দু ও মুসলিম সংস্কৃতির মিশেলে এক নতুন সংস্কৃতির উদ্ভব।
মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের কারণ:
মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের বহু কারণ ছিল, যার মধ্যে অর্থনৈতিক দুর্বলতা, আঞ্চলিক শক্তির উত্থান, ধর্মীয় দ্বন্দ্ব, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্রমবর্ধমান প্রভাব ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
স্থান: আগ্রা, ফতেহপুর সিক্রি, লাহোর, দিল্লি, ঢাকা, কাবুল, শেখপুরা ইত্যাদি।
আরো তথ্যের জন্য অপেক্ষা করুন।