মেঘনা সেতু: বাংলাদেশের গৌরবময় একটি অবকাঠামো
মেঘনা সেতু বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর অবস্থিত এই সেতু দেশের দুই প্রধান শহরকে সংযুক্ত করেছে। জাপান সরকারের অর্থায়নে নির্মিত এই সেতুর আনুষ্ঠানিক নাম ‘জাপান-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু-১’। তবে জনপ্রিয় নামেই এটি বেশি পরিচিত।
অবস্থান ও গঠন:
মেঘনা সেতু ঢাকার দক্ষিণ-পূর্বে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মেঘনা নদীর উপর অবস্থিত। ২৩°৩৬.১৬২′ উত্তর ৯০°৩৬.৯৯১′ পূর্ব এই ভৌগোলিক অবস্থানে অবস্থিত ৯৩০ মিটার দীর্ঘ এই সেতুর ১৩টি স্প্যান রয়েছে। ক্যান্টিলিভার এবং গার্ডার প্রযুক্তিতে নির্মিত এই সেতু দুই দিকে যানবাহন চলাচলের জন্য উপযোগী। সেতুটির নির্মাণে জাপানের নিপ্পন কোয়েই কো. লি. প্রতিষ্ঠান কাজ করেছিল।
ইতিহাস:
১৯৯১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মেঘনা সেতু উদ্বোধন করা হয়। জাপানের সহায়তায় নির্মিত বিশ্বের একক বৃহত্তম প্রকল্প হিসেবে এটি পরিচিত। ২০০৫ সালে সেতুর ব্যাপক মেরামত কাজ করা হয়, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেতুর বিভিন্ন অংশে ক্ষতি হওয়ার কারণে।
অর্থনৈতিক প্রভাব:
মেঘনা সেতু নির্মাণের ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বেড়েছে এবং অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই সেতু ব্যবহার করে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে দ্রুত পণ্য পরিবহন সম্ভব হয়েছে।
সামাজিক প্রভাব:
এই সেতু নির্মাণের ফলে আশপাশের এলাকার মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ইত্যাদি সামাজিক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
উপসংহার:
মেঘনা সেতু বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এই সেতুর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এর দীর্ঘস্থায়ীত্ব এবং অবদান আরো বৃদ্ধি করা সম্ভব।