মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়, যখন সামরিক বাহিনী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে। এর ফলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ, সশস্ত্র প্রতিরোধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বৃদ্ধি পায়। ২০২০ সালের নির্বাচনে অং সান সু চির দল, NLD, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল, কিন্তু সেনাবাহিনী নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বীকার করে। সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে হাজার হাজার মানুষ নিহত এবং গ্রেফতার হয়েছে, এবং অনেক লোককে পালিয়ে যেতে হয়েছে।
এই অস্থিরতার মূলে রয়েছে মিয়ানমারের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামরিক বাহিনীর রাজনীতিতে প্রভাব। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান এবং গৃহযুদ্ধের ঘটনা ঘটে আসছে। বিভিন্ন জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সাথে বর্মীদের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব, অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং দুর্বল রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব এ অস্থিরতার অন্যতম কারণ।
সামরিক অভ্যুত্থানের পর, বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী, যেমন আরাকান আর্মি (AA), মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। এছাড়াও, ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (NUG), একটি সমান্তরাল সরকার, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য লড়াই করছে। এই সংঘাতের ফলে, হাজার হাজার শরণার্থী বাংলাদেশ এবং ভারতে পালিয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক মহল থেকে নিষেধাজ্ঞা এবং অর্থনৈতিক অবরোধ মিয়ানমারের অর্থনীতিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। মিয়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিরতা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যও একটা বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে, মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। সামরিক জান্তা এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাত অব্যাহত থাকলে, দেশটির অস্থিরতা আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।