মালালা ইউসুফজাই: শিক্ষার অধিকারের জন্য এক অদম্য যোদ্ধা
মালালা ইউসুফজাই (জন্ম: ১২ জুলাই, ১৯৯৭) একজন পাকিস্তানি শিক্ষা আন্দোলনকর্মী, যিনি তালিবানদের হুমকি উপেক্ষা করে মেয়েদের শিক্ষার অধিকার রক্ষার জন্য লড়াই করেছেন। তার এই সাহসী পদক্ষেপের জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করেছেন এবং সর্বকনিষ্ঠ নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হয়ে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন।
মালালা সোয়াত উপত্যকা, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ, পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জিয়াউদ্দিন ইউসুফজাই একজন শিক্ষা কর্মী ছিলেন, যিনি মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। মালালার ছোটবেলা থেকেই তার শিক্ষা ও নারী অধিকারের প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল। ২০০৯ সালে, তিনি বিবিসির জন্য 'গুল মকাই' ছদ্মনামে একটি ব্লগ লেখা শুরু করেন, যেখানে তালিবান শাসনের অধীনে তার অভিজ্ঞতা এবং মেয়েদের শিক্ষার অবস্থা তুলে ধরেন।
২০১২ সালের ৯ অক্টোবর, স্কুলে যাওয়ার সময় তাকে একজন তালিবান বন্দুকধারী গুলি করে আহত করে। এই ঘটনা বিশ্বব্যাপী নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় তোলে। মালালাকে বার্মিংহ্যামের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি সফলভাবে চিকিৎসা লাভ করেন। এই ঘটনার পর থেকে, মালালা শিক্ষার অধিকারের পক্ষে আরও বেশি করে কাজ করতে থাকেন।
জাতিসংঘের শিক্ষাবিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী শিক্ষা প্রসারের জন্য কাজ করছেন। তিনি মালালা ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা মেয়েদের শিক্ষার জন্য কাজ করে। ২০১৪ সালে, মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তার জীবনীমূলক বই 'আই অ্যাম মালালা' বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
মালালা ইউসুফজাই কেবল একজন শিক্ষা কর্মী নন, তিনি একজন প্রেরণাদায়ী ব্যক্তিত্ব, যিনি সাহস এবং দৃঢ়তা দিয়ে বিশ্বের সামনে মেয়েদের শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।