মামলা বাণিজ্য

  • *মামলা বাণিজ্য: একটি জাতীয় ব্যাধি**

সম্প্রতি বাংলাদেশে মামলা বাণিজ্য একটি উদ্বেগজনক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যক্তিগত বিরোধ এবং অর্থনৈতিক সুযোগের সন্ধানে এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দেশের আইনশৃঙ্খলা ও বিচার ব্যবস্থাকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

  • *ঘটনা ও তথ্য:**

৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় মামলা বাণিজ্যের চরম উদাহরণ দেখা গেছে। এক নারীকে তাঁর জীবিত স্বামীকে শহীদ দেখানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, পরে তিনি জানান তাকে চাকরির প্রলোভন দিয়ে মামলা করতে বাধ্য করা হয়েছে। একাধিক হত্যার ঘটনায় একাধিক মামলা দায়েরের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ৫ আগস্টের পর ২৯টি রাজনৈতিক মামলায় ১৯২৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই মামলার খসড়া প্রকাশিত হওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা চাওয়া হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর মডেল থানায় ১৩টি, আখাউড়ায় ৫টি, আশুগঞ্জে ৪টি, নবীনগরে ২টি এবং অন্যান্য থানায় ১টি করে মামলা দায়ের হয়েছে।

  • *ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ভূমিকা:**

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী মামলা বাণিজ্যের বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন যে, জুলাই-আগস্টের ঘটনায় অনেক মামলার বাদীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা করেছেন এবং চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িত। তিনি মামলায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

  • *চাঁদাবাজি ও হয়রানি:**

মামলা বাণিজ্যের সাথে জড়িতদের ধরার চেষ্টা চলছে। পুলিশ সতর্কতা জারি করেছে, মানুষকে চাঁদা না দিতে অনুরোধ করেছে। থানায় মামলা করতে গিয়ে ভুক্তভোগীদের হয়রানির শিকার না হওয়ার নিশ্চয়তা প্রয়োজন।

  • *রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:**

এই মামলা বাণিজ্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হতে পারে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হচ্ছে। অনেক নিরীহ ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত শত্রুতা ও এলাকাভিত্তিক দ্বন্দ্বের কারণে আসামি করা হচ্ছে।

  • *সমাধান:**

মামলা বাণিজ্য রোধ করতে দৃঢ় কর্মসূচি প্রয়োজন। পুলিশের ভূমিকা সুন্দর হতে হবে। ভুয়া মামলা দায়ের কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

  • *উপসংহার:**

মামলা বাণিজ্য দেশের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা। এই সমস্যার সমাধান জন্য সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সকল পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

মূল তথ্যাবলী:

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫ আগস্টের পর মামলা বাণিজ্যের চরম উদাহরণ
  • একাধিক হত্যার ঘটনায় একাধিক মামলা দায়ের
  • ডিএমপি কমিশনার মামলা বাণিজ্যের বিষয়টি স্বীকার করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন
  • চাঁদাবাজি ও হয়রানি রোধে পুলিশের সতর্কতা
  • রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে মামলা

গণমাধ্যমে - মামলা বাণিজ্য

গণঅভ্যুত্থানের পর মামলা বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।