মত প্রকাশের স্বাধীনতা: একটি বিশ্বজনীন অধিকার
মত প্রকাশের স্বাধীনতা শুধু বর্তমান সময়ের আলোচ্য বিষয় নয়, বরং এর ইতিহাস অনেক পুরোনো। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর সর্বত্রই এই অধিকারের জন্য মানুষ লড়াই করে আসছে। Freedom of speech, freedom of expression, freedom of thought এবং freedom of conscience এই শব্দগুলি এই অধিকারের সাথে সম্পর্কিত। বাংলাদেশের সংবিধানে চিন্তা, বিবেক, বাক এবং ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা আছে।
১৯৪৮ সালে গৃহীত Universal Declaration of Human Rights-এর ১৯ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রত্যেক মানুষের মত ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। International Covenant on Civil and Political Rights (ICCPR) এর ১৯ নং অনুচ্ছেদেও একই স্বীকৃতি রয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ICCPR-এ স্বাক্ষর করেছে (চীন করেনি)।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদেও চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। অনুচ্ছেদ ৩৯(১) কোনো বাধানিষেধের কথা বলে না, কিন্তু ৩৯(২)তে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, নৈতিকতা ইত্যাদির স্বার্থে যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধের কথা বলা আছে। Universal Declaration of Human Rights, 1948 এর ২৯(২) অনুচ্ছেদে এর ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য। সরকারের কর্মকান্ড, নীতি, সামরিক নীতি, সশস্ত্র বাহিনী ইত্যাদি নিয়ে মতামত প্রকাশ করা গণতন্ত্রের একটা অংশ। Schachi v. U.S. (398 US 58) ও Hector V A. G. Of Antigua and Bermuda (1990 2 All E.R 103,106) মামলার রায় এরই প্রমাণ।
বাংলাদেশে নাগরিকদের মত প্রকাশের অধিকার সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত, কিন্তু বাস্তবে এর নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। জরুরী অবস্থা, ইন্টারনেট এবং ব্লগের ব্যবহার ইত্যাদি এই সীমাবদ্ধতার কারণ হতে পারে। এই বিষয়গুলি পরবর্তী পর্বে আলোচনা করা হবে।