সেরনিয়াবাত মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ: একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে সেরনিয়াবাত মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ নামটি বেশ কিছু বিতর্কের সাথে জড়িত। তিনি বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর মেজো ছেলে। আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই হওয়ায় তাঁর পরিবার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হলেও, তাঁর বাবার প্রভাব ও তাঁর ব্যবসায়িক কার্যক্রম তাকে প্রায়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে।
গ্রেফতার ও রিমান্ড: ২০২৩ সালের অক্টোবরে ঢাকায় গ্রেপ্তারের পর তাকে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। বরিশালেও তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে, একটি বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এবং অপরটি বিএনপির মিছিলে হামলার ঘটনায়। বরিশাল নগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান এবং সদস্যসচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার এই দুই মামলার বাদী।
ব্যবসায়িক কার্যক্রম: মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ ঢাকায় প্রধানত ব্যবসায় নিয়োজিত ছিলেন। তার তৈরি পোশাক কারখানা, আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা ছিল। তিনি এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালকও ছিলেন।
পরিবার ও রাজনীতি: তার বড় ভাই সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ছিলেন এবং বাবার রাজনীতি দেখভাল করতেন। ছোট ভাই আশিক আবদুল্লাহ বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহর কোনো স্থানীয় দলীয় পদ ছিল না, তিনি কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
অভিযোগ ও বিতর্ক: তার বিরুদ্ধে বরিশালে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজে জড়িত থাকার এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়নে সক্রিয় ভূমিকা পালনের অভিযোগ রয়েছে। তবে, বরিশালের রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় না থাকলেও, তাঁর একটি সমর্থক বাহিনী ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯৬ সালে তাঁর বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। ৫ আগস্ট কালীবাড়ী সড়কে আবদুর রব সেরনিয়াবাতের (মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহর দাদা) বাড়িতে আগুনের ঘটনার সাথে তার সংযোগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
মূল্যায়ন: মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহর রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম, এবং তার পরিবারের প্রভাব বিবেচনায়, তাকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটের একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব বলা যায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং ন্যায় বিচারের জন্য উপযুক্ত আইনি প্রক্রিয়া অপেক্ষিত।
মঈনউদ্দিন আব্দুল্লাহ (দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান): এ নামটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এই ব্যক্তির জন্য ব্যবহৃত। তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে কর্মজীবন শুরু করেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২১ সালের ৩ মার্চ তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। তার মেয়াদে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা বিভিন্ন নিয়মের অধীনে পরিচালিত কমিশনের শীর্ষ ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন।