বেগম মতিয়া চৌধুরী: অগ্নিকন্যা থেকে আওয়ামী লীগের সৈনিক
বেগম মতিয়া চৌধুরী (৩০ জুন ১৯৪২ - ১৬ অক্টোবর ২০২৪) বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ছিলেন। তার রাজনৈতিক জীবন ছিল ৬০ বছরেরও বেশি সময়ের, যা ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছানো পর্যন্ত বিস্তৃত। তিনি বামপন্থী রাজনীতি থেকে শুরু করে, পরবর্তীতে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) এবং অবশেষে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। তাঁর সাহসী এবং কার্যকর বক্তৃতার জন্য তিনি 'অগ্নিকন্যা' উপাধিতে পরিচিত ছিলেন।
প্রাথমিক জীবন ও ছাত্র রাজনীতি:
১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুরে জন্মগ্রহণ করেন মতিয়া চৌধুরী। তার পিতা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন তিনি খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ইডেন কলেজে পড়ার সময় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত হন এবং ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খানের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং বারবার কারারুদ্ধ হন।
মুক্তিযুদ্ধ ও রাজনৈতিক কর্মজীবন:
১৯৭০-৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মতিয়া চৌধুরী সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং দলের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জিয়াউর রহমান এবং এরশাদের সামরিক শাসনামলেও বারবার গ্রেফতার হন। ১৯৯৬, ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারে কৃষি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শেরপুর-২ আসন থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি জাতীয় সংসদের উপ-নেতা নিযুক্ত হন।
মৃত্যু ও স্মৃতি:
২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন মতিয়া চৌধুরী। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে রাষ্ট্র ও দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।
উল্লেখযোগ্য তথ্য:
- তার রাজনৈতিক জীবনের ৬০ বছরের অধিক সময়কাল।
- 'অগ্নিকন্যা' উপাধি।
- আওয়ামী লীগ সরকারে তিনবার কৃষিমন্ত্রী।
- জাতীয় সংসদের উপ-নেতা।
- বাংলা একাডেমী কর্তৃক সম্মানসূচক ফেলোশিপ।
যদি কোন তথ্য অসম্পূর্ণ থাকে বা নতুন তথ্য পাওয়া যায়, আমরা আপনাদের অবহিত করব।