বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) - একটি ঐতিহ্যবাহী ও সম্মানিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে দেশের মেধাবী তরুণ-তরুণীরা প্রকৌশল ও প্রযুক্তির শিক্ষা লাভ করে। কিন্তু বুয়েটের ইতিহাসে কেবলমাত্র শিক্ষা নয়, ছাত্র রাজনীতিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ২০১৯ সালে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্র রাজনীতি নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হয়ে ওঠে। আবরার ফাহাদ ছিলেন বুয়েটের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী, যাকে ছাত্রলীগের কর্মীরা নির্মমভাবে হত্যা করে। এই ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে। তবে ২০২৪ সালে হাইকোর্ট এই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে দেয়।
এই সিদ্ধান্তের পর বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির প্রসঙ্গ আবারো আলোচনায় চলে আসে। অনেক শিক্ষার্থী রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পক্ষে মত দিলেও, অন্যদিকে ছাত্রলীগ ‘নিয়মতান্ত্রিক’ ছাত্র রাজনীতির পক্ষে অবস্থান নেয়। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থানের’ দাবি জানায়। এই বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষাবিদদের বিভিন্ন মতামত রয়েছে। কেউ ছাত্র রাজনীতির পক্ষে, কেউ বিপক্ষে। কেউ মনে করেন ছাত্র রাজনীতি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য প্রয়োজন, আবার কেউ মনে করেন এটি শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে। আবরার ফাহাদের ভাইও ছাত্র রাজনীতির বিরোধিতা করেছেন।
বুয়েট কর্তৃপক্ষ আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বুয়েট ক্যাম্পাসে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা, এবং শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা করা সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেদিকে সকলের সচেতনতা অপরিহার্য।