বীরগঞ্জ ও শরীয়তপুর: দুই অঞ্চলের তুলনা
বাংলাদেশের দুটি ভিন্ন জেলায় অবস্থিত বীরগঞ্জ ও শরীয়তপুর দুটি আলাদা প্রশাসনিক অঞ্চল। এদের মধ্যে কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই। এই লেখায় আমরা উভয় অঞ্চলের ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক, জনসংখ্যাগত এবং অর্থনৈতিক দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করব।
বীরগঞ্জ:
বীরগঞ্জ দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলা। ১৭৯৩ সালে ঘোড়াঘাট থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমান বীরগঞ্জ থানা ১৮৭৩ সালে দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলার মাঝামাঝি স্থাপিত হয়। ১৯৮৩ সালে এটি উপজেলায় উন্নীত হয়। এর আয়তন ৪১৩ বর্গ কিলোমিটার এবং (২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী) ২,৬৯,৮৯৩ জন লোক বাস করে। ঢেপা ও করতোয়া নদী এ উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। ধান, গম, পাট, আলু, সরিষা, শাক-সবজি ও ফলমূল এখানকার প্রধান ফসল। চালকলসহ কিছু শিল্পকারখানা বিদ্যমান। শিক্ষার দিক থেকে এটি একটি উন্নত অঞ্চল।
শরীয়তপুর:
শরীয়তপুর ঢাকা বিভাগের একটি জেলা। এর ঐতিহাসিক নাম কেদারপুর। বারোভূঁইয়া বিপ্লবী চাঁদ রায় ও কেদার রায়ের সাথে এ অঞ্চলের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৭৬ সালে মাদারীপুরের পূর্বাঞ্চল নিয়ে নতুন মহকুমা গঠনের পর বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক হাজী শরীয়ত উল্লাহর নামে এটি শরীয়তপুর নামে নামকরণ করা হয়। ১৯৮৪ সালে এটি জেলায় উন্নীত হয়। এর আয়তন ১১৮১.৫৩ বর্গ কিলোমিটার। মুন্সিগঞ্জ, বরিশাল, চাঁদপুর ও মাদারীপুর জেলার সাথে এর সীমান্ত রয়েছে। ধান, পাট, গম, পিঁয়াজ, মিষ্টি আলু, টমেটো ইত্যাদি এখানকার প্রধান ফসল। কাশা ও পিতলের তৈজসপত্র তৈরির জন্য এটি একসময় বিখ্যাত ছিল।
উল্লেখযোগ্য পার্থক্য:
বীরগঞ্জ একটি উপজেলা, যখন শরীয়তপুর একটি জেলা। বীরগঞ্জের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর, যদিও কিছু শিল্পকারখানাও বিদ্যমান। শরীয়তপুরেও কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তবে এখানে নৌপথের ব্যবসা এবং কিছু ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কারণে অর্থনীতির বিভিন্ন দিক বিদ্যমান।