বাঁশখালী উপজেলা: চট্টগ্রাম জেলার একটি সুন্দর উপকূলীয় উপজেলা, যেটি বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত। এটি চট্টগ্রাম জেলার ৫ম বৃহত্তম উপজেলা এবং কক্সবাজারের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকতের জন্য বিখ্যাত। ৩৭৬.৯০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলার উত্তরে আনোয়ারা উপজেলা, দক্ষিণে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা, পূর্বে লোহাগড়া ও সাতকানিয়া উপজেলা এবং পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ১৯১৭ সালের ১৫ জুলাই বাঁশখালী থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে তা উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। এখানে ১টি পৌরসভা এবং ১৪টি ইউনিয়ন রয়েছে।
বাঁশখালী নামের উৎপত্তি নিয়ে বিভিন্ন জনশ্রুতি প্রচলিত। ডঃ আবদুল করিমের 'বাঁশখালীর ইতিহাস ও ঐতিহ্য' গ্রন্থে চারটি কিংবদন্তির উল্লেখ রয়েছে, যার মধ্যে একটি জনপ্রিয় কিংবদন্তি হলো বাঁশ কেটে খালী করার সাথে এর সম্পর্ক। ২০২৩ সালের হিসাবে উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ৪,৩১,১৬২ জন। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী সকলেই এখানে বসবাস করেন। শিক্ষার হার ৩৭.৪%। ৩টি ডিগ্রি কলেজ, অনেক মাদ্রাসা ও বিদ্যালয় এখানে রয়েছে।
অর্থনীতিতে কৃষিকাজ, ব্যবসা, চাকরি এবং বিভিন্ন পেশা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কালীপুরের লিচু দেশব্যাপী বিখ্যাত। চা, আলু, আদা, পান, শাকসবজি, আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, তরমুজ, লেবু, পেয়ারা প্রভৃতি ফসল উৎপাদিত হয়। সামুদ্রিক মাছ এবং চিংড়িও উল্লেখযোগ্য। চট্টগ্রাম-বাঁশখালী সড়ক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাঁশখালীতে ব্যাপক নৃশংসতা চালিয়েছিল এবং অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছিল। এই উপজেলায় মসজিদ, মন্দির, বিহার ও গীর্জা রয়েছে। সাঙ্গু নদী উপজেলার উত্তর সীমান্ত দিয়ে বয়ে যায়। ৪৪টি হাটবাজার এবং ৬টি বাৎসরিক মেলাও এখানে রয়েছে।